টর্নেডো ডেবির আঘাতে বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়া

ডেস্ক: শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ডেবির আঘাতে অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং লাখো বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। গতকাল স্থানীয় সময় দুপুরে কুইন্সল্যান্ডের বোয়েন ও এয়ারলি সৈকতের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে ক্যাটাগরি চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড়টি অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ডে পৌঁছায় বলে জানিয়েছিল বিবিসি। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ২৬৩ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল এলাকায় তা-ব শুরু করে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এটি দেশের ভিতরে দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে ক্যাটাগরি তিন মাত্রার ঝড়ে পরিণত হয়। এ সময়ের মধ্যে একজন গুরুতর জখম হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল পালামেন্টেকে জানিয়েছে, সে একটি দুর্যোগ মোকাবিলা পরিকল্পনা সক্রিয় করে তুলেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু সময়ের জন্য ঘূর্ণিঝড় ডেবির ক্ষয়ক্ষতির পুরো ছবি হয়তো পাওয়া যাবে না।

কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার আনাস্তাসিয়া পালাসে জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে কারণ ব্যাপক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এবং ফোনে যোগাযোগও বিপর্যস্ত হয়েছে। কুইন্সল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার আয়ান স্টুয়ার্ট জানিয়েছে, প্রোসারপাইনে একটি দেয়াল ধসে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছে। ক্যারাভান পার্কের স্বত্তাধিকারী রোজ উয়িলকোকস জানিয়েছে, বোয়েনের কাছে তার বিষয়-সম্পত্তি ‘আবর্জনায়’ পরিণত হয়েছে। সে বলেছে, “সেখানে অন্তত ৫০টি গাছ উপড়ে পড়েছে। প্রতিবেশীদের ছাদগুলো পার্কে এসে পড়েছে। আমাদের শেডগুলোও ভেঙে পড়েছে।”

বিদ্যুৎ সঞ্চালন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কখন স্বাভাবিক হবে তা বলতে পারছে না তারা। পরিস্থিতি বাইরে বের হওয়ার মতো নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঘরে ভিতরে অবস্থান করার বিষয়ে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। ২০১১ সালে কুইন্সল্যাণ্ডে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসির তা-বের পর এটাই ওই অঞ্চলে আসা সবচেয়ে শক্তিশালী সাইক্লোন বলে আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছিলো। এই পরিস্থিতিতে ২৫ হাজার মানুষকে উপকূলীয় এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মূল ভূখণ্ডে আসার আগে ঘূর্ণিঝড়টি হুইটসানডে দ্বীপপুঞ্জে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। সেখানে ঘরবাড়ির ছাদ উড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

শার্লি নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছে, বাতাস এতোটাই শক্তিশালী যে, মনে হচ্ছে বাঁ দিক থেকে ট্রেন ছুটে যাচ্ছে ডান দিকে। গাছগুলো ক্রমাগত এদিক-ওদিক ঝঁকি খাচ্ছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ডেবির প্রভাবে দুই মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। সেই সঙ্গে চলতে পারে ভারি বৃষ্টি। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুকনো খাবার ও জরুরি সামগ্রী মজুদ করতে শুরু করায় সুপার মার্কেটগুলো প্রায় খালি হয়ে গেছে। কুইন্সল্যান্ড কর্তৃপক্ষ ১০২টি স্কুল, ৮১টি শিশু নিকেতন এবং দুটি বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।