বন্যা ও ভূমিধসে নেপাল ও ভারতে কমপক্ষে ৯০ জনের প্রাণহানি

ডেস্ক: গত কয়েক দিনের বন্যা ও ভূমিধসে নেপাল ও ভারতে ৯০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপাল। টানা কয়েকদিনের মুষলধারে বৃষ্টিতে সেখানে বহু ঘরবাড়ি ও সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে। অবশ্য নেপালের নদীগুলোয় পানির উচ্চতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বলে সরকারি দফতরগুলো জানিয়েছে। খবর এএফপি।

নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে সোমবার থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ জনে। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় আমাদের কর্মীরা ক্রমাগত অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছি।’

উদ্ধার অভিযানে নেপালের সেনাবাহিনীও যুক্ত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে সেনা কর্তৃপক্ষ বেশকিছু ছবি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, গ্রামবাসীরা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়ে মোটরবোটে করে উদ্ধার হওয়ার অপেক্ষা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাঠমান্ডুর ২৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত পিউথান জেলার। সেখানে অনেক ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ আসামেও বন্যা আঘাত হেনেছে। গত সপ্তাহে সেখানকার নদীগুলোর পানি উপচে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল গতকাল বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘আসামের ২১টি জেলার তিন হাজার গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে।’

হাজার হাজার গৃহহীন মানুষ মহাসড়ক ও উঁচু জায়গায় স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোয় আশ্রয় নিয়েছে। সোনোয়াল জানান, ‘আমরা বন্যাদুর্গতদের মাঝে খাদ্য, ওষুধ ও অন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছি।’ আসামের বিখ্যাত কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কও বন্যার কবলে পড়েছে। সেখানকার প্রাণীরা সংরক্ষিত বনটি থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে বিলুপ্তপ্রায় একশৃঙ্গী গন্ডারের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা আরো বাড়ছে।

ভারত ও নেপালে বন্যা নতুন কোনো ঘটনা নয়। প্রতি বছরই বন্যার কারণে দেশ দুটিতে অনেকে প্রাণ হারান। তবে এবারের বন্যা নেপালিদের জন্য বাড়তি দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে দেশটিতে এখনো লাখ লাখ লোক অস্থায়ী ঘরে বাস করছে।