জ্বালানি তেলের দাম এক মাসে সর্বোচ্চ

ঢাকা: উত্তোলন সীমা নির্ধারণের সম্ভাবনায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে ঠেকেছে। সেপ্টেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ (নিমেক্স) ও লন্ডনের ইন্টার কন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) গত সপ্তাহ থেকে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে পণ্যটির দাম। খবর মার্কেটওয়াচ।

গতকাল নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) সেপ্টেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েডের (ডব্লিউটিআই) দাম বেড়েছে ১ ডলার ২৫ সেন্ট বা ২ দশমিক ৮ শতাংশ। এদিন পণ্যটি লেনদেন হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৪৫ ডলার ৭৪ সেন্টে, যা গত ১৫ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। এর আগে গত সোমবার ব্যারেলপ্রতি ডব্লিউটিআই লেনদেন হয়েছিল ৪৫ ডলার ৩ সেন্টে।

এদিন লন্ডনের ইন্টার কন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) অক্টোবরে সরবরাহের চুক্তিতে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট তেলের দাম ১ ডলার ৩৮ সেন্ট বা ২ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন পণ্যটি ব্যারেলপ্রতি লেনদেন হয় ৪৮ ডলার ৩৫ সেন্টে, যা গত ১২ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। আগের দিন একই পরিমাণ পণ্যের দাম ছিল ৪৭ ডলার ৪৫ সেন্ট।

অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজভুক্ত (ওপেক) জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী শীর্ষ দেশ সৌদি আবর। ঐতিহাসিকভাবে দেশটি তেলবাজারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। জ্বালানি তেলের বাজার স্থিতিশীলতা নিয়ে সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহর সাম্প্রতিক বক্তব্য পণ্যটির দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। গত বৃহস্পতিবার ফালিহ জ্বালানি তেলের বাজার স্থিতিশীল করতে শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দেন। আগামী মাসের শেষ দিকে এ আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

রুশ জ্বালানিমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক জানান, প্রয়োজনে যৌথভাবে জ্বালানি তেল উৎপাদনের সীমা আরোপের চিন্তা করছে রাশিয়া। এ বিষয়ে সৌদি আরব ও অন্যান্য উৎপাদক দেশের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে দেশটি।

প্রাইস ফিউচার গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক ফিল ফ্লাইন এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘তেল উত্তোলনে নীতিনির্ধারণী দেশগুলো বর্তমানে সক্রিয়। তবে পণ্যটির উত্তোলনসীমা নির্ধারণের যে খবর শোনা যাচ্ছে, তা বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত হয়েও যেতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দোহায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক সময়ের দুর্যোগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টায় রয়েছে সৌদি আরব। পাশাপাশি দেশটি কূটনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে, যা সাময়িকভাবে জ্বালানি তেল উত্তোলনসীমা নির্ধারণে সহায়তা করবে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে জ্বালানি তেলের উত্তোলনসীমা নির্ধারণ নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে ইরান বাদসাধায় পণ্যটির উত্তোলনকারী সব দেশ সম্মত না হওয়ায় বৈঠকটি কার্যকর হয়নি।

তবে এবারো সব দেশ বিষয়টিতে সম্মত নাও হতে পারে বলে মনে করছেন অপশনএক্সপ্রেসের পণ্যবাজার বিশ্লেষক অ্যারন লিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘লাভবান হওয়ার সম্ভাবনায় জ্বালানি তেলের উত্তোলনসীমা নির্ধারণে ইরান হয়তো সম্মত হবে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, বাকি অন্য দেশগুলো কি একই প্রস্তাবে রাজি হবে? এদিকে জ্বালানি তেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। প্রতিষ্ঠানটি চাহিদা বৃদ্ধিতে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুদ কমে আসার আশঙ্কা করছে। – বণিকবার্তা