ছাত্রসংঘের ৪৭ কর্মী নিয়ে আল-বাদরের যাত্রা শুরু

পাক ফৌজের পক্ষ থেকে আল-বাদর বাহিনীকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। উক্ত প্রশিক্ষণ ৭ থেকে ১২ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হতো। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীকে স্বয়ংক্রিয় হাল্কা অস্ত্র চালানো, অস্ত্র খোলা এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বহন করার কৌশল, বিস্ফোরণ, মাইন অকার্যকর করার কায়দা এবং ওয়্যারলেসে সংবাদ প্রেরণের কলাকৌশল শেখানো হতো। হাতেকলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে আল-বাদরের মুজাহিদদের নিম্নোক্ত অস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। যার মধ্যে ছিল, বারো বোর বন্দুক, থ্রি নট থ্রি, লাইট মর্টারগান, এ্যান্টিএয়ারক্রাফট গান, স্টেনগান, হাত বোমা, গ্রেনেড, রিভলবার এবং মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়া রুশ ও হিন্দুস্তানী অস্ত্র।
আল-বাদর যেহেতু একটি জামাতী মওদুদীবাদী আদর্শভিত্তিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ছাত্রসংঘের নেতৃবর্গ আল-বাদর ক্যাডেটদের চেতনা ও আদর্শগত প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
আল-বাদর কর্মীদের মধ্যে প্রথম থেকে দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়। বৃহত্তর প্রতিরক্ষার কারণে আল-বাদর বাহিনীকে প্রত্যেক ইউনিটকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রথম বিভাগ: উক্ত বিভাগের দায়িত্ব পূর্ব-পাকিস্তানে ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করা। যেহেতু জনগণ অনবরত গুজব, বিবিসি রেডিও, মস্কো এবং অল-ইন্ডিয়া রেডিওর খবর শুনে ভীষণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সেই বিভ্রান্তকর অপপ্রচার খ-ন করা, বাস্তবতা সম্পর্কে অবগত করা, জনসভার আয়োজন করা, স্কুল-কলেজের ছাত্রদের এবং শিক্ষকদের নিরাপত্তা বিধান করা উক্ত বিভাগের দায়িত্বে ছিল।
দ্বিতীয় বিভাগ: উক্ত বিভাগের দায়িত্ব বিভিন্ন দল আকারে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা, মাঠ পর্যায়ে শত্রুর মোকাবেলা করা এবং আগ্রাসন প্রতিহত করা। এ সব ব্যাপারে আল-বাদর জেলা পর্যায়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্দেশ কিংবা অনুমোদনক্রমে অভিযান পরিচালনা করতে।