গুলশান হামলায় সম্পৃক্ত সন্দেহভাজন হাসনাত পুলিশের কাছে নেই!

ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মিদের উদ্ধারে সেনা কমান্ডো অভিযানের পর যাদের উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের মধ্যে নাটকীয় কৌশলে উদ্ধার হয়েছিলেন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিম। সামাজিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় হামলাকারীদের সাথে তার যোগসূত্রের তথ্য। তবে উদ্ধারের পর হাসনাতকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে নিয়ে গেলেও এখন হাসনাতের কোন সন্ধান দিতে পারছেন না পুলিশ। তারসাথে আরো একজন নিখোঁজ হচ্ছেন ঘটনার চাক্ষুষ স্বাক্ষী ব্যবসায়ী শাহরিয়ার খানের ছেলে তাহমিদ হাসিব খান (২২)।

হামলার আট দিন পরেও তারা বাসায় ফেরেনি বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় যে মামলা হয়েছে তাতে উদ্ধারদের তালিকায় নাম থাকলেও আসামিদের মধ্যে ওই দুজনের নাম নেই।

হাসনাত ও তাহমিদ কোথায় জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান শনিবার রাতে বলেন, “যাদের উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের প্রত্যেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ এখন পুলিশের কাছে নেই।”

গুলশানের ওই ক্যাফেতে ১ জুলাইয়ের জিম্মি দশার একটি ভিডিওচিত্র প্রকাশের পর নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাতের বিরুদ্ধে হামলায় সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা উঠে আসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

হোটেলের পাশের এপার্টমেন্ট থেকে কোরিয়ান নাগরিক ডিকে হোয়াং-এর ধারণকৃত ভিডিও:

অভিযান শুরুর আগের এক ভিডিওতে ক্যাফের দরজায় দেখা যায় হাসনাত রেজা করিমকে।
সেনা অভিযান শুরুর আগের এক ভিডিওতে ক্যাফের দরজায় দেখা যায় হাসনাতকে।
অভিযান শুরুর আগের এক ভিডিওতে ক্যাফে থেকে হাসনাত রেজা করিমকে সপরিবারে বেরিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে।
অভিযান শুরুর আগের এক ভিডিওতে ক্যাফে থেকে হাসনাতকে বেরিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে।

 

 

 

 

 

 

 

নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে ২০১২ সালে হাসনাতসহ চারজন শিক্ষককে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহতি দিয়েছিল বলে খবর প্রকাশ হয়। ক্যাফেতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে যে পাঁচ হামলাকারী নিহত হন, তাদের মধ্যে নিবরাস ইসলামও ঢাকার এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। হামলাকারীদের একজন ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আয়াজ হোসেন সেনা কমান্ডোর গুলিতে নিহত হলেও বিশেষ কৌশলে উদ্ধার নাটকে বেঁচে যান হাসনাত।

অন্যদিকে ব্যবসায়ী শাহরিয়ার খানের ছেলে তাহমিদ কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। একদিন আগে দেশে ফিরে হামলার দিন ইফতারের পর বন্ধুদের সঙ্গে তিনি ওই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের ভাষ্য।

এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জীবিত অবস্থায় যে ৩২ জনকে উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে, সে তালিকায় হাসনাত ও তাহমিদের নাম রয়েছে।

ঘটনার কয়েকদিন পর ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এই দুজনের বিরুদ্ধে হামলায় সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন।

গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সন্দেহের তালিকায় থাকা উদ্ধার হওয়া জিম্মি হাসনাত রেজাউল করিম ও তাহমিদ হাসিব খান তাদের হেফাজতেই আছেন।

পুলিশ এখন তাদেরকে নিজেদের জিম্মায় রাখার কথা অস্বীকার করলেও দুজনের বাবা বলছেন, তাদের ছেলেরা গোয়েন্দা পুলিশের কাছেই আছে।

হাসনাতের বাবা এম রেজাউল করিম শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, “ডিবি ওকে নিয়ে যাবার সময় বলেছিল বাসায় পৌঁছে দেবে। কিন্তু এখন তো ওর সঙ্গে দেখাও করতে পারছি না।”