আমদানি বাড়ছে, দুই মাসে ২১ লাখ টন খাদ্যশস্যের ঋণপত্র

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (৫৭ দিনে) প্রায় ২১ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ২৭০ টন শস্য এরই মধ্যে আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত চালের একটি বড় অংশ সরকারি পর্যায়ে ভিয়েতনাম থেকে এবং বেসরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে কেনা হচ্ছে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানিকৃত চাল বন্দর হয়ে এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের তথ্যমতে, অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত ২০ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭০ টন চাল ও গম আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রধান খাদ্যশস্যের মধ্যে গম বাংলাদেশে তেমন উৎপাদন হয় না। তাই বরাবরই চাহিদার বেশির ভাগ গম আমদানি করতে হয়। কিন্তু বিগত দু-তিন বছর ধান উৎপাদন কম হওয়ায় চাল আমদানিও বাড়ছে।

জানা গেছে, নানা কারণে উৎপাদন কম হওয়া এবং বাজারে চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হয় সরকার। ফলে সরকারি গুদামে চালের মজুদ আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়। এতে খাদ্য সংকটের ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় সরকার ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল সংগ্রহের পদক্ষেপ নেয়। জিটুজি পর্যায়ে ৯০৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় এ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দরপত্র ছাড়াই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ১৪ জুন এ চাল আমদানির অনুমতি দেয়।

খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, প্রতি টন ৪৭০ মার্কিন ডলার দরে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল ও ৪৩০ ডলার দরে দুই লাখ টন আতপ চাল আমদানি করা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী ভিয়েতনামের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ভিনাফুড এসব চাল সরবরাহ করছে। এরই মধ্যে ১১ জাহাজ চাল চলে এসেছে। আজ-কালের মধ্যে আরো দুটি জাহাজে করে চাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে।

খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৪ সেপ্টেম্বর নাগাদ সরকারি পর্যায়ে ৩ লাখ ২১ হাজার ১০ টন চাল ও ১ লাখ ২২ হাজার ২১০ টন গম মিলিয়ে মোট ৪ লাখ ৪৩ হাজার ২২০ টন খাদ্যশস্য মজুদ ছিল, যা এক বছর আগে সরকারি খাদ্য মজুদের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। গত বছরের একই সময়ে খাদ্যশস্য মজুদ ছিল ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩০ টন।

চলতি অর্থবছর ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে আমদানিকৃত চাল এসেছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৮০ টন। কিন্তু বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি হয়েছে এর তিন গুণ চাল। এ সময়ে বেসরকারি পর্যায়ে ৪ লাখ ১৪০ টন চাল আমদানি হয়েছে।