সিদ্ধান্তহীনতায় ক্ষতি প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা

ঢাকা: চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল)। কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত এ সার কারখানার বার্ষিক উত্পাদনক্ষমতা ৫ লাখ ৬১ হাজার টন। কিন্তু একটি যন্ত্রাংশের (রিঅ্যাক্টর) অভাবে দেড় বছর ধরে উত্পাদন বন্ধ রয়েছে সেখানে। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সিইউএফএল।

সিইউএফএলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের (অ্যাডমিন ও হিসাব) তথ্যমতে, কারখানাটি চালু করতে জাপানি প্রযুক্তির নতুন রিঅ্যাক্টর প্রতিস্থাপনে খরচ হবে ৯০ কোটি টাকা। এজন্য নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনে (বিসিআইসি) প্রায় অর্ধশতবার চিঠি দেয়া হয়েছে। এমনকি রিঅ্যাক্টরটি কেনার বিষয়ে এ পর্যন্ত বিসিআইসির ২৩টি বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত যদি এখনই নেয়া হয়, তাহলেও এটি প্রতিস্থাপনে কমপক্ষে দেড় বছর সময় লাগবে। সে হিসাবে দেড় বছরে আরো প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হবে সিইউএফএল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিআইসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, এটি ঠিক যে বেশকিছু কর্মকর্তার সিদ্ধান্তহীনতায় রিঅ্যাক্টর সচল করার প্রক্রিয়ায় অনেক কালক্ষেপণ হয়েছে। তবে সিইউএফএলের রিঅ্যাক্টর সচল করার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। নতুন একটি রিঅ্যাক্টর কেনার পরিকল্পনাও রয়েছে। জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির সহযোগিতায় একটি ইতালীয় প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে পুরনো রিঅ্যাক্টর সচল করার চেষ্টা চলছে। কোনো কারণে যদি এটি সচল নাও হয়, সেক্ষেত্রে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিইউএফএলের মেশিনারি শাখার তথ্যমতে, ১৯৮৭ সালে চালু হওয়া কারখানাটির রিঅ্যাক্টরের মেয়াদ ছিল ২০ বছর। সে হিসাবে ২০০৭ সালে রিঅ্যাক্টরটির মেয়াদ শেষ হয়। এর পরও এটি মেরামতের মাধ্যমে সার উত্পাদন অব্যাহত রাখে সিইউএফএল। কিন্ত বারবার মেরামতের পরও এখন রিঅ্যাক্টরটির প্রেসার ২৫ কেজির বেশি বাড়ানো যাচ্ছে না। প্রেসার বাড়াতে গত সাত মাসে রিঅ্যাক্টরটির আটবার হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।