যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছে না ব্রেক্সিট নেতা জনসন

ডেস্ক: ব্রিটেনে ২৩ জুনের গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় হওয়ার পর ধরেই নেয়া হচ্ছিল লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসনই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।

ভোটের পরদিন প্রধানমন্ত্রী ক্যমেরন পদত্যাগের পর সেই ধারণা আরো পোক্ত হয়।
কারণ, ইইউ ছাড়ার পক্ষের প্রচারণায় বরিস জনসনই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গণভোটে অপ্রত্যাশিত ফলাফলের কৃতিত্ব তাকেই দিচ্ছিলেন অধিকাংশ বিশ্লেষক।

কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতেৃত্বের প্রার্থী হওয়ার সময়সীমা শেষের কয়েক মুহূর্ত আগে দু’দুবার নির্বাচিত লন্ডনের সাবেক মেয়র প্রত্যাশিতভাবে লড়াইয়ে না নামার সিদ্ধান্ত জানান।

তার এই ঘোষণাকে নাটকীয় বললে কম বলা হবে। ব্রিটেনের বিশ্লেষকরা একে পলিটিক্যাল বম্বশেল বা একটা রাজনৈতিক বোমা ফাটানোর সঙ্গে তুলনা করছেন।
কেনো তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা এখনো পরিষ্কার করেননি। তার এই সিদ্ধান্ত অনেককেই হতবাক করেছে।

তবে এই নাটকীয়তার আগে আজ আরও নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে, ব্রিটেনের রাজনীতিতে। ইইউ ছাড়ার পক্ষে বরিস জনসনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী কনজারভেটিভ পার্টির আরেক নেতা মাইকেল গভ আজ আকস্মিকভাবে দলের নেতা হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছেন।
অথচ আশা করা হচ্ছিল, মাইকেল গভ বরিস জনসনকেই সমর্থন দেবেন এবং তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে পাশে থাকবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বরিস জনসন হয়তো এমন আশংকা করছেন যে, জেতার জন্য যতজন এমপির সমর্থন দরকার হবে, তার হয়তো সেই সমর্থন নেই।
বরিস জনসনের এই ঘোষণার পর, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হচেছন, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন পর্যন্ত যারা কনজারভেটিভ পার্টির নেতার হওয়ার জন্য প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে চলে এসেছেন থেরেসা মে, যে এখন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রশ্নে গণভোটে তিনি সরাসরি কোন পক্ষ নেননি, ফলে দলের উভয় অংশের দিক থেকে তিনি সমর্থন পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ধরে নেয়া হচ্ছে থেরেসা মে’র প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন ব্রেক্সিটপন্থী বিচারমন্ত্রী মাইকেল গভ।
বিরোধী লেবার পার্টিতেও নেতৃত্ব নিয়ে বড় ধরণের বিরোধ তৈরি হয়েছে।

লেবার পার্টি ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে, কিন্তু গণভোটে হেরে যাওয়ার পর অনেকেই দলের নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বের সমালোচনা করে রীতিমত বিদ্রোহ করেছেন। তার ছায়া মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। দলের পার্লামেন্টারি পার্টির বেশিরভাগ সদস্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।

ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ব্রিটেনের বড় দুটি দলেই এখন কার্যত নেতৃত্বশূন্যতা দেখা যাচ্ছে।