ব্যাংক নিয়ে দুশ্চিন্তায় অর্থমন্ত্রী

 

ঢাকা: কিছু ব্যাংক গুরুতর সংকটে পড়েছে। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া কোনো গ্রুপ যেমন ব্যস্ত তেমনি খেলাপি ঋণে জর্জরিত হয়েছে এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান। অনেকেই এখন মালিকানা পরিবর্তনের জন্যে চেষ্টা করছেন। এধরনের পর্যবেক্ষণ খোদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের যা তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে পাঠিয়েছেন। এসব ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা যায় কিনা সে বিবেচনা করতেও তাগিদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

গত ২৮ ডিসেম্বর এধরনের এক চিঠি গভর্নরের কাছে পাঠিয়েছেন মুহিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমস্যাবহুল ব্যাংকগুলোর পরিচালক রদবদল করেছে। এমডিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী বলেন, উদ্যোক্তরাই ফার্মার্স ব্যাংকের সংকটের জন্যে দায়ী। তিনি চান, অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হোক এ ব্যাংকটিকে। গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের কাছেও এধরনের মত প্রকাশ করে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা করবে। এ পরিস্থিতিতে আমার পরামর্শ এটাই। তবে একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আরো তিনটি ব্যাংককে লাইসেন্স প্রদানে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বাংলা ব্যাংক, পিপলস ইসলামি ব্যাংক ও পুলিশ ব্যাংক’কে লাইসেন্স প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, একদিকে ব্যাংকগুলোকে একীভূত এবং নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, জোর করে কোনো ব্যাংককে একীভূত করার কোনো আইন দেশে নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো কিছু করার নেই। আর্থিকভাবে কোনো শক্তিশালী ব্যাংক দুর্বল কোনো ব্যাংককে একীভূত করতে চায় না।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মানসুর বলেন, দুই বা ততোধিক ব্যাংককে একীভূত করার প্রচেষ্টা বর্তমান ব্যাংকিং পরিবেশের সঙ্গে খাপখাওয়ার যোগ্য। নজিরবিহীনও বটে। ৫৭টি ব্যাংক থাকার পরও এ পরিস্থিতিতে আরো নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদানকে তিনি অগ্রহণযোগ্য মনে করেন। ব্যাংক বিধি ও ব্যাংকিং আইনের বেশকিছু লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটছে।

এধরনের বিভিন্ন ত্রুটির কারণে ফার্মার্স ব্যাংক এখন আমানতকারীদের টাকা ফেরতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ফার্মার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও এর অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতিকে গত ২৭ নভেম্বর সরে যেতে বাধ্য করে। অপসারণ করা হয় ব্যাংকটির ব্যাংকটির এমডি একেএম শামীমকেও।

গত ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনআরবিসি ব্যাংকের এমডি দেয়ান মুজিবুল রহমানকে অপসারণ করার নির্দেশ দেয়। তার বিরুদ্ধে ৭’শ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ ছিল। এনআরবিসি ও ফার্মার্স ব্যাংক দুটির পরিচালনা পর্যদ নতুন করে গঠন করা হয়। এছাড়া গত বছর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও সোশাল ইসলামি ব্যাংকে হস্তক্ষেপের বিষয়টি বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার শিকার হয়।