বিশ্বে বাংলাদেশের প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার আমের বাজার রয়েছে

ঢাকা: বিশ্বে আম উৎপাদনকারি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম এবং বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার আমের বাজার রয়েছে। আজ বুধবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং ইউএসএআইডি’র এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রজেক্ট’র যৌথ উদ্যোগে আজ ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে আয়োজিত ‘আমের বাজারজাতকরণে নীতি সহায়ক পরিবেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যান বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি প্রবন্ধে বলেন,‘আমাদের দেশে সঠিক সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থার অপ্রতুলতার ফলে আম আহরণের পর প্রায় শতকরা ৩৩ ভাগ আম নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য তিনি ফলমূল এবং শাক-সবজির বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য আইন’কে আরো সুনিদিষ্ট করারও আহবান জানান।

প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশে আম পাকানোর জন্য ফরমালিন ব্যবহার করা হয় না, কারণ আম পাকানো এবং সংরক্ষনে ফরমালিন কোন কাজে আসে না।

অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ড. আব্দুর রহিম বলেন, আমে কেমিক্যাল কার্বোহাইড্রেট ব্যবহার মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তিনি বলেন, প্রকৃতিগত ভাবে আমে ১ দশমিক ২২ থেকে ৩ দশমিক শুণ্য ৮ পিপিএম পরিমানে ফরমালিন থাকে, যা আমকে পাকতে সাহায্য করে। তিনি আরোও জানান, আম পাকতে ২০০ থেকে ১০০০ পিপিএম পরিমান ইথিফোন ব্যবহার নিরাপদ। ড. রহিম প্রবন্ধে বলেন, বর্তমানে কৃষি পণ্য চাষাবাদে কীটনাশকের ব্যবহার উল্লেখজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ডিসিসিআই’র প্রাক্তন সহ-সভাপতি ও ডিসিসিআই-ডাই প্রকল্পের টিম লিডার শোয়েব চৌধুরী বলেন, ফরমালিন ব্যবহারের ভুল ধারণা কারণে ২০১৩ সালে প্রচুর পরিমাণে আম ধ্বংস করা হয়েছিল এবং সে সময় আমে ফরমালিন চিহ্নিতকরনে ব্যবহৃত মেশিনগুলোও সঠিক ছিল না।

মুন্সী শফিউল হক বলেন, জনগনের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরনের লক্ষ্যে সরকার তার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আম উৎপাদনে নিয়োজিতদের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের ফলে রাজশাহীর পর সাতক্ষীরা বর্তমানে আম উৎপাদনের এলাকা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। তিনি আমচাষীদের কীটনাশক ব্যবহারের সচেতন করার কার্যক্রম গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ হাসেম, বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশনের মহাসচিব জাকির হোসেন অংশ গ্রহণ করেন। ইউএসএআইডি’র এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রকল্পের প্রধান মাইকেল ফিল্ড সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।