নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্য রপ্তানিতে অসুবিধা হওয়ায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে ৪৩২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, গত অর্থবছর একই সময়ে রাশিয়ায় রপ্তানি আয় ছিল ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে বাংলাদেশ ১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কম রপ্তানি করেছে।

এর ফলে ভেস্তে যাচ্ছে রাশিয়ায় ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানির স্বপ্ন। এই দেশটি আউটারওয়্যার, সোয়েটার, অ্যাকটিভওয়্যার, স্পোর্টসওয়্যার ও জার্সির মতো গার্মেন্টস পণ্যের উদীয়মান বাজার হিসেবে বিবেচিত।

২০২১-২২ অর্থবছরে রাশিয়ায় পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৬৩৮ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার। এক বছর আগে এটি ছিল ৬৬৫ দশমিক ৩১ মিলিয়ন ডলার।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে, বার্ষিক পোশাক রপ্তানি ৩৬ শতাংশ বেড়েছিল। স্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারকরা বার্ষিক ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন।

তবে চলমান সংঘাতের কারণে শুধু পোশাক পণ্যই নয়, অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে।

উদাহরণ হিসেবে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্নোটেক্স গ্রুপের কথা বলা যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম খালেদ জানান, যুদ্ধের আগে তারা রাশিয়ায় আউটারওয়্যার পণ্য রপ্তানি করতেন। এখন তারা সরাসরি রাশিয়ার বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না। এমনকি, রপ্তানি পণ্যের পরিমাণও অনেক কমে গেছে।

২০২১ সালে স্নোটেক্স গ্রুপ ১ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছিল। কিন্তু, ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৫০০ ডলারে। গত ১ বছরে প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি আয় কমেছে ৯৭ শতাংশের বেশি।

যুদ্ধের আগে এসএম খালেদ আশা করেছিলেন, তাদের ব্যবসা অন্তত ৩০ শতাংশ বাড়বে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে রপ্তানি বাড়েনি।’

সম্প্রতি, প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার পিস তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্রয় আদেশ পেয়েছে। তারা আশা করছেন যে রাশিয়া থেকে আরও ক্রয় আদেশ আসবে।

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। রাশিয়ার শীর্ষ ব্যাংকগুলোকে সুইফট ব্যবস্থা থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে, দেশটির সঙ্গে লেনদেন প্রায় স্থবির হয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

‘এ কারণে আমাদের তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে রাশিয়ায় পণ্য পাঠাতে হচ্ছে। রাশিয়ার ক্রেতাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে,’ যোগ করেন এসএম খালেদ।