মার্কিন মদদেই ইয়েমেনে সৌদি আরবের মুসলিম গণহত্যা

ডেস্ক: সিরিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইয়েমেনেও মানবতার সংকট চরমে পৌঁছেছে। ছয় মাসব্যাপি যুদ্ধ এবং নৌ-অবরোধের ফলে অনাহারে গুমরে মরছে গোটা দেশ। দেশের মোট জনসমষ্টির ৯০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের অবিলম্বে ত্রাণ ও অন্যান্য সহায়তার প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত মানুষের প্রায় ৯০ শতাংশই ছিলেন ইয়েমেনের নাগরিক। ইয়েমেনের সীমিত পরিকাঠামো আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত।
রাজধানী সানা’র প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষই সৌদি আরব এবং তার সহযোগীদের লাগাতার বিমান আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছেন। ঘনবসতিপূর্ণ নাগরিক অঞ্চলের স্কুল, হাসপাতাল এবং ঘরবাড়ি লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালানো হয়েছে। সৌদি আরব তার সহযোগীদের গোয়েন্দা সহায়তা ও অন্যান্য নানা সাহায্য করছে ব্রিটেনকে সঙ্গী করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দু’দেশই সৌদি আরবকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ এমন অস্ত্র দিয়েই সৌদিকে সাজিয়েছে আমেরিকা, যাতে ইয়েমেনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জীবনহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।
উদ্দেশ্য, বিপুল সংখ্যক জীবনহানি এবং এই জীবনহানির নারকীয়তা, বীভৎসতা দেখে যাতে আগামী প্রজন্ম মূক ও বধির হয়ে যায়। অস্ত্র উৎপাদনকারীরা ছাড়া এই রক্তাক্ত যুদ্ধে প্রকৃত সুবিধাভোগী হলো সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীগুলি। যেমন, আল কায়দা ইন দ্যা অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা (এ কিউ এ পি) এবং ইসলামিক স্টেট (আই এস) যারা ইয়েমেনে কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছে। ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি ও সহযোগী বাহিনীর যুদ্ধে এ কিউ এ পি এবং আই এস ক্ষমতাশালী হওয়া ছাড়া আর কোনো লক্ষ্যই পূরণ হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই যুদ্ধকে সমর্থন করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? সৌদি আরবের যুদ্ধে মার্কিন মদদে অস্ত্রের নতুন বরাতের জোয়ার বয়ে গেছে।
মার্কিন অস্ত্র নির্মাতারা সৌদি আরবে প্রায় ৮০০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্রশস্ত্র বিক্রি করেছে। ছ’মাস আগে সৌদি আরবের ‘অপারেশন ডিসিসিভ স্টর্ম’ যুদ্ধ শুরুর সময় থেকেই এই অস্ত্র বিক্রির সূত্রপাত হয়। প্রেসিডেন্ট ওবামা নির্বাচিত হওয়ার সময় থেকে প্রায় ৯,০৪০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশই বিক্রি হয়েছে সৌদি আরবের কাছে। সমালোচকরা বলছেন, ইয়েমেনে রাষ্ট্র অনুমোদিত গণহত্যা দেখেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না দেখার ভান করছে। ইয়েমনে সৌদি আরবের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে মার্কিন সমর্থনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব শুধুমাত্র ওই অঞ্চলেই পড়ছে না সামগ্রিকভাবে ওই দেশেই পড়েছে বিশেষত সৌদি আরবে। ইয়েমেন-এ সৌদির যুদ্ধ চালানোর নেপথ্যে রয়েছে ইয়েমেনের অপসারিত প্রেসিডেন্ট হাদির পুনর্বহাল। এই যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ইয়েমেনের শিয়াপন্থি হুথি সন্ত্রাসবাদিদের ধ্বংস করা। কারণ, সৌদি আরব মনে করে সন্ত্রাসবাদিরা ইরানের মদতপুষ্ট। উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনের আর্থ-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষিতের গভীরে নিহিত এই হুথি আন্দোলন।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের অভিমত, হুথি আন্দোলনের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক থাকলেও কখনই তা বকলমে ইরানের হয়ে ছায়াযুদ্ধ চালায়নি। হুথি আন্দোলন এবং এর নেতৃত্ব স্বাধীন। এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার ভয় সৌদি আরব এবং তার সহযোগীদের এ জাতীয় রক্তাক্ত যুদ্ধে নামিয়েছ। আর এর ফলে লাভ হচ্ছে মার্কিন এবং ব্রিটিশ অস্ত্র উৎপাদনকারীদের। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশ ইয়েমেনের হুথিদের তুলনা টানছেন আফগানিস্তানের তালেবানদের সঙ্গে। বিশেষত গেরিলা যুদ্ধের নিরিখে। ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, আকাশ থেকে বিমান হানা চালিয়ে এবং মুষ্টিমেয় সংখ্যক সেনা পাঠিয়ে হুথিদের পরাস্ত করা যাবে না। সৌদি আরব এবং তার সহযোগীদের এত ক্ষমতা নেই যে হাজার হাজার সেনাবাহিনী পাঠিয়ে হুথি ও তার সহায়ক শক্তিকে পরাস্ত করবে। ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে মদদ দিয়ে শুধুমাত্র ইয়েমেনের ধ্বংসই নিশ্চিত করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এ কিউ এ পি ও আই এস কে আরও ক্ষমতাশালী করে তুলছে।
মার্কিন হস্তক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্যও বিঘিœত হচ্ছে। এখনই আলোচনার দরজা না খুললে বছরের পর বছর এই যুদ্ধ চলতেই থাকবে। আর তা দুর্বল করবে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমির শাহির সরকারকে। যে সময়কাল ব্যাপি তেলের দাম কম ছিল তখন এই দুই সরকার শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে যুদ্ধে। এই যুদ্ধে জয়ী হয়নি কেউই। বরং শক্তিশালী হয়েছে এ কিউ এ পি এবং আইএস এর মতো গোষ্ঠীগুলি। পারস্য উপসাগরের রাজতন্ত্রগুলিই এখন এই গোষ্ঠীগুলির আক্রমণের লক্ষ্য। আর সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমির শাহির রাজতন্ত্রগুলি মনে করছে, এই দুই গোষ্ঠী ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে। যুদ্ধ ছড়িয়েছে ইয়েমেনের দীর্ঘ, বিস্তৃত, অসুরক্ষিত সীমানা বরাবর। সৌদি সীমানা বরাবর ঘাঁটিগুলিতে অসংখ্য সফল আক্রমণ করেছে হুথি যোদ্ধা এবং ইয়েমেনের সেনাবাহিনী। অল্প সময়ের মধ্যেই হুথি বাহিনীর কাছে জিজান এবং নাজরান প্রদেশের শহর ও গ্রামগুলির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সৌদি সেনাবাহিনী। সৌদির আইনসভায় মতানৈক্যও রয়েছে।
রাজা সলমন এবং তাঁর ছেলে ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে আইনসভার অন্যান্য সদস্যদের মতভেদও আছে। বছর তিরিশের মহম্মদ বিন সলমন বিশ্বের সব থেকে তরুণ ও কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সৌদির সাবধানী ও সতর্ক পররাষ্ট্রনীতি থেকে বিচ্যুত হয়েছে বর্তমান সৌদি আরব। তরুণ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সৌদি মন্ত্রিসভায় গুরুত্বে দ্বিতীয় কিন্তু আইনসভার অনেক সদস্যই তাঁকে বেপরোয়া বলে মনে করেন। বাস্তব এটিই, সৌদির বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যেই মতান্তর, মতভেদ বাড়ছে। ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধে মার্কিন মদদ হাজার হাজার নাগরিকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ইয়েমেনের পঞ্চাশ বছরে উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে মুছে দিয়েছে। ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনেও যা হয়েছিল, ইয়েমেনেও কার্যত তাই ঘটে চলেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তিত হচ্ছে। নিসন্দেহে অস্ত্র উৎপাদনকারীদের কাছে এ এক খুশির খবর। এর আগেও ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, গাজা সহ আরব দুনিয়ায় পশ্চিমী শক্তির মদদে সাম্প্রতিক যুদ্ধগুলিতে জেনেভা চুক্তির লঙ্ঘন ঘটেছে। কিন্তু ইয়েমেনে সৌদির যুদ্ধ সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে। অথচ পশ্চিমী শক্তি এক্ষেত্রে আশ্চর্যজনকভাবে নীরব, নিশ্চুপ। ছ’মাস ধরে ইয়েমেনে যুদ্ধের কৌশলের অংশ হিসেবে খাদ্য, জ্বালানি, ত্রাণ (এমনকি রাষ্ট্রসঙ্ঘের মাধ্যমে দেয়া। বন্ধ করে দেয়া; নাগরিক, ঐতিহাসিক, শিক্ষা, ধর্মীয় এবং চিকিৎসা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর নির্বিচারে বোমা বর্ষণ, রাস্তা থেকে বিদ্যুৎ, জল যাবতীয় পরিকাঠামোর ধ্বংস সাধন এবং নিষিদ্ধ অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে লাগাতার। ২ কোটি মানুষের এমন এক দেশের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা হয়েছে যে দেশের কার্যকর কোনও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই নেই। গাজা ভূখন্ডের মতোই এ দেশও বিমান থেকে বোমা বর্ষণের জন্য উন্মুক্ত। ইজরাইল বিদেশ সন্ত্রকের এক আধিকারিক মন্তব্য করেছেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ধারাবাহিকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে ইয়েমেনে। এই লঙ্ঘনের জন্য তিনি রাষ্ট্রসঙ্ঘের শাখা সংগঠন, সরকার, পশ্চিমী মিডিয়া এবং নাগরিক সংগঠনগুলিকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, ইয়েমেনে জোট বাহিনীর বোমা বর্ষণে নীরব থেকে কার্যত সমর্থন জানিয়ে আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধের বৈধতার দিকটিই মুছে দিয়েছে। ইয়েমেনের ওপর যুদ্ধের পশ্চিমী ব্যাখ্যা কী? পশ্চিমী দেশগুলির মুখপাত্ররা জানাচ্ছেন, আনসারুল্লা নামে এক জঙ্গি আন্দোলন বৈধ সরকারকে সরিয়ে রাজধানীর দখল নেয়। কাজেই, বৈধতা ফেরাতে ইউ এন এস সি আগের সরকারকে পুনরায় ক্ষমতাসীন করতে চায়। যদিও, ইয়েমেনের জাতীয় সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশই আনসারুল্লার দিকেই আছে। রাজধানী সানা এবং দেশের উত্তরে এই আন্দোলনের সমর্থনভূমি ভালোই রয়েছে। এটিই বাস্তব। ভুলে যাওয়া হচ্ছে মাত্র এক বছর আগেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের তদারকিতে আনসারুল্লা ও অন্যান্য ইয়েমেনি দলগুলির মধ্যে এক রাজনৈতিক চুক্তি হয়েছিল যার পোশাকি নাম ছিল ‘পিস অ্যান্ড ন্যাশনাল পার্টিসিপেশন’। অথচ বছর ঘুরতেই আনসারুল্লা আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা বন্ধ করে দেয়া হলো আর ইয়েমেনের অভ্যন্তরে ‘বৈধতা’ প্রতিষ্ঠা করতে এক সামরিক জোট জড়ো হলো।
কাজেই, জোটবাহিনী শুধু ইয়েমেনের ধ্বংস সাধনই করছে না, নিজেদের তৈরি আইনের তোয়াক্কাও করছে না। এরপর কি রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার আর কোনও সুযোগ থাকে? আনসারুল্লা আন্দোলন থেকে স্লোগান উঠেছে- ‘আমেরিকা এবং ইজরাইলের মৃত্যু’। আমেরিকা এবং ইজরাইল বিরোধী কণ্ঠস্বর শোনা গেছে রাজধানী শহরের গলি থেকে রাজপথে। ছো, গরিব, প্রান্তিক এক আরব দেশ সৌদি রাজতন্ত্রের বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত হয়েও যে প্রতিবাদের স্বর উচ্চারণ করেছে তা সৌদি বাহিনী এবং তার মদদদাতাদের স্বাভাবিকভাবেই পছন্দ হয়নি। আনসারুল্লা এক ধর্মীয়-রাজনৈতিক আন্দোলনের সংগঠন। ইয়েমেনের সোশ্যালিস্ট পার্টিগুলির মতো ধর্মনিরপেক্ষ, রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গেও আনসারুল্লা কাজ করছে।
একদিকে চলছে রাজনৈতিক মত বিনিময় অন্যদিকে ‘বৈধতা’ ফেরাতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২১৬নং সিদ্ধান্তকে আক্রমণের ভিত্তি করেছে জোটবাহিনী। এই যুদ্ধ কি নিছকই অর্থের জন্য? এমন প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্যই সৌদি আরব (ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর থেকেও বেশি ব্রিটিশ বিমান যার অধীনে) এবং জি সি সি মিডিয়া, যুদ্ধাস্ত্র এবং মানুষের এক বড় অংশকেই কিনতে পারে। কিন্তু অর্থ যা পারে তার থেকেও বেশি আজকের দিনে জোটবাহিনীর প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সমর্থন। নৌপথ অবরোধ সৃষ্টিকারী ফ্রান্সের জিবুতিতে এখনও একটি ঘাটি রয়েছে। ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় থেকে গোটা দুনিয়া জুড়ে যোগাযোগ রক্ষার জন্য এই ঘাঁটি ব্যবহৃত হয়েছে। আজ, জিবুতির প্রধান কাজ সমুদ্রের গভীরে চীন, এশিয়া ও পশ্চিমী দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী কেবল’র ওপর নজরদারি চালানো। জিবুতির ফরাসি সেনাবাহিনী সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে ওই কেবলের ওপর নজরদারি চালায়। ফরাসি সেনাবাহিনীর সঙ্গে লোহিত সাগরে টহল দেয়া ইজরাইলি ডুবোজাহাজের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে।
ইসরাইলি এবং মার্কিন অধিকারিকদের নির্দেশে জি সি সি-র ‘র‌্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট ফোর্স’র প্রথম পদক্ষেপই হলো এই জোটবাহিনী। আক্রমণকারী জি সি সি বাহিনীর মৃত্যুতে ইজরাইলি যুদ্ধের ধাঁচেই যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। শুরু হয় বোমাবর্ষণ, বিমান হানা। কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কণ্ঠস্বর শোনা যায়নি। নতুন যুদ্ধের গবেষণাগার কি হতে চলেছে ইয়েমেন? উঠেছে এ প্রশ্নও। গাজার সঙ্গে তুলনা টানলে ইয়েমেন অনেক বড়। জনসমষ্টির ইনটেলিজেন্স ম্যাপিং অত্যন্ত দুর্বল। ইয়েমেনের মাটিতে মার্কিন ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা হয়েছে। ইয়েমেনের বিরুদ্ধে জি সি সি-র যুদ্ধে কিন্তু ওমান নেই। ভারত মহাসাগরে বাণিজ্য বাড়াতে চায় সৌদি। পূর্ব আফ্রিকার বাজারের দিকেও নজর তাদের। ইয়েমেনের তেল এবং গ্যাসের ওপর মার্কিন নজরও রয়েছে। বোমাবর্ষণ করে জয় সুনিশ্চিত করতে চাইছে সৌদি আরব। আরব দুনিয়ায় নিজের কর্তৃত্ব কয়েম করতে তৎপর সৌদি।
এ বছর জুন মাসে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক এক পরিষদে সৌদি আরবের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আনোয়ার ইশকি গোটা বিষয়টির বিশদ ব্যাখ্যা দেন। তাঁর সঙ্গে ওই পরিষদীয় বৈঠকে যোগ দেন ইজরাইলের রাষ্ট্রদূত ডোরে গোল্ড। ইশকি’র কথা নিয়ে সৌদি আরবে কোনও খবর হয়নি।
ইশকি বলেছিলেন, “আরব দুনিয়ায় এক সম্ভাবনাময় তেলের ক্ষেত্র রয়েছে যার পোশাকি নাম রুব আল-খালি। এই তেল ক্ষেত্রটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপসাগরীয় সহায়তা পরিষদ (গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল) এবং ইয়েমেনের সহযোগিতা প্রয়োজন। মার্কিন সংবিধান, যা আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করে, তার গণতন্ত্রকে বিকশিত করে, এর ওপর ভিত্তি করেই জি সি সি এবং ইয়েমেনের ঐক্য সাধন করতে হবে। ইথিওপিয়ার সম্ভাবনাময় ওগাদেন তৈল ক্ষেত্র ইথিওপিয়ার নেতৃত্বে হর্ন অফ আফ্রিকাকে ঐক্যবদ্ধ করবে। আফ্রিকা মহাদেশ এবং আরব দুনিয়ার মধ্যে একটি সেতু নির্মাণ করতে হবে। আল-নুর নামে সেতুটি জিবুতির আল নুর শহর এবং ইয়েমেনের আল-নুর শহরের মধ্যে সংযোগ স্থান করবে।”
সূত্র: সাপ্তাহিক একতা