নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা আজ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন, ২০১৮) জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর ফজলে কবির। বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালকে নির্বাচনী বছর বলা হচ্ছে। তাই এ বছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধির লাগাম টানতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সাল জাতীয় নির্বাচনের বছর। তাই এ বছর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে। একই সঙ্গে নতুন মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লাগাম টানতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ঘোষণা আসতে পারে। এ ছাড়া নতুন মুদ্রানীতিতে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৬ দশমিক ২০ শতাংশ। আর এ সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের (২০১৬) একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা। এ হিসেবে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।
আগের মুদ্রানীতিতে আগামী জুনে তা ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এবারও এ লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী বিনিয়োগ ঠেকাতে এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এডিআর কমানো হতে পারে বলে গত ৩ জানুয়ারির ব্যাংকার্স সভায় বলা হয়। তবে ঋণ বিতরণের সীমা না কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।
এদিকে চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮) বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার প্রাক্কলন করা হয়। বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংকিং খাত থেকে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকার ঋণ না নিয়ে উল্টো ১২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
উল্লেখ্য, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। ছয় মাস অন্তর এ মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।