অর্থনৈতিক মন্দায় রিও ডি জেনিরোতে সহিংসতা

ডেস্ক: বিভিন্ন গ্যাং-এর মধ্যকার সহিংস ঘটনায় সম্প্রতি বেশ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরোতে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ব্রাজিলিয়ান সরকার ঝুঁকেছে সেনাবাহিনীর দিকে। রিও ডি জেনিরোর নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনীর এক জেনারেলকে।

এই সমস্যাকে “ক্যান্সার” হিসেবে আখ্যা দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট মিচেল টেমার জানায়, এই পরিকল্পিত সন্ত্রাসীরা প্রদেশটির দখল নিয়ে নিয়েছে। বাৎসরিক কার্নিভালের সময়ে গন্ডগোল লাগলে রিও-র গভর্নর সাহায্যের আবেদন করেছিল সরকারের কাছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকান্ডকে নিয়ন্ত্রন করবে বলে জানা যায়।

এই অপারেশনের দ্বায়িত্বে থাকছে দেশটির ইস্টার্ন মিলিটারি কমান্ডের জেন ওয়াল্টার সাউজা ব্রাগা নেট্টো নামের একজন সেনা কর্মকর্তা। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব পালনের পারদর্শিতার জন্য সুনাম রয়েছে এই কর্মকর্তার। এই আদেশ বাস্তবায়নের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের সময় টেমার জানায়, অবস্থার অবনতির কারণে “কঠোর পন্থা” অবলম্বন করতে বাধ্য হচ্ছে সে, ”সরকার এই বিশৃঙ্খলার কঠিন জবাব দেবে এবং সংগঠিত অপরাধচক্রগুলোকে দমন করতে যা করা দরকার, তার সবই করতে আমরা প্রস্তুত।”

বিখ্যাত রিও কার্নিভালের এই বছরের আয়োজনে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বন্দুকযুদ্ধ ও লুটপাট চলেছে উৎসব চলার সময়ে। মারাত্মক এই ঘটনায় নিহত হয়েছে তিনজন পুলিশ অফিসার। ব্রাজিলের চ্যানেলগুলোতে দেখা যায় পর্যটকদের ঘিরে ধরে বিভিন্ন গ্যাং-এর সদস্যরা ডাকাতি করছে।

নিরাপত্তা ক্রমশ কমতে থাকায় প্রদেশটির গভর্নর লুইজ ফার্নান্দো পিজাও সরকারের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করে। সেই আবেদনে সে জানায়, অস্ত্রধারী গ্যাং-এর সদস্যদের মোকাবিলায় সেনা হস্তক্ষেপই একমাত্র উপায়। হতাহতদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে সে বলে, “আমরা আসলে প্রস্তুত নই। প্রথম দিনে কিছু ভুল ছিলো এবং আমরা টহল চালিয়ে গেলেও লাভ হয়নি।“
রিও-র পুলির্কের জন্য বরাদ্দ বাজেট গত কয়েক বছরে কমে গিয়েছে আর্থিক মন্দার কারণে। জানা যায়, পুলির্কের টহল গাড়ির পেট্রোলের দাম দেয়ার মত অর্থ নেই পুলির্কের হাতে।

দুর্নীতি সমগ্র দেশে মন্দা এবং তেলের বাজারে মূল্য হ্রাস এর কারণে রিও-তে আর্থিক অবস্থা খুব বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই আর্থিক সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-। রিওর স্থানীয় সরকারের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ২০১৬ সালের চেয়ে ৮% এবং ২০১৫ সালের চেয়ে ২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।
রিওর নাগরির্কেরা স্বাভাবিক জীবনই কাটাচ্ছে। কিন্তু এই স্বাভাবিক সময়ে মাঝেমাঝেই ঘটছে বিপত্তি। প্রায়ই অনাকাঙ্ক্ষিত গুলি খেয়ে মারা যাচ্ছে শিশুরা,গোলাগুলিতে বন্ধ হচ্ছে মহাসড়ক এবং গণ ডাকাতি ঘটেছে কার্নিভালের সময়।