বছরে ৩২ হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে ভারতে

ঢাকা: বাংলাদেশের শিল্প খাত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে যেসব ভারতীয় নাগরিকরা কাজ করে, তারা বছরে ৩২ হাজার কোটি টাকা নিয়ম মেনে ভারতে নিয়ে যায়। এছাড়াও অবৈধ পথে তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি টাকা ভারতে পাচার হচ্ছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে আলাপের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, অবৈধ পথে যে টাকা যায়, তা বিবেচনায় নিলে মোট পরিমাণ দ্বিগুণ হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে কর্মবাজারের কোনো যোগ নেই। এ কারণে দেশে শিক্ষিত তরুণেরা বেকার থাকে। আবার বিদেশ থেকে কর্মী এনে কাজ করাতে হয়। ফারুক সোবহান বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে দক্ষতার উন্নয়নের ব্যবস্থা নিতে হবে।

উন্নয়নের জন্য দেশের আইন, প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামোসহ সামগ্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হবে বলে মনে করেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ আমরা করেছি। এটা নিয়ে সুখী হতে পারি। কিন্তু জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হলেও আত্মতুষ্টির কিছু নেই।

আমিনুল ইসলাম বলেন, ট্রেড লজিস্টিকে আমরা প্রতিবছর ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা হারাচ্ছি, এখন গড়ে ১০ দিন পণ্যবাহী জাহাজকে বহিঃনোঙ্গরে থাকতে হয়, যা নিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারব না। তিনি বলেন, আমার তত্ত্ব হচ্ছে, বর্তমান অর্থনৈতিক অবকাঠামো দিয়ে আমরা আগাতে পারব না। পরের ধাপে যাওয়ার জন্য বৃহৎভাবে সংস্কার প্রয়োজন।’

তিনি উল্লেখ করেন, ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশের তালিকায় অবস্থান নেয়ার যে লক্ষ্য সরকার ঠিক করেছে, তা অর্জনে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার আরও ১০ থেকে ১২ গুণ বাড়াতে হবে। বর্তমানে আমাদের মাথা পিছু আয় এক হাজার ৬০০ ডলারের কাছাকাছি, আমাদের দেশের মোট আয় ২৫৬ বিলিয়ন ডলারের মতো। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হতে হলে ২৪ বছরের মধ্যে দেশের মোট আয় তিন ট্রিলিয়নে উন্নীত করতে হবে। অর্থাৎ ২৪ বছরের মধ্যে আজকের বাংলাদেশকে ১০ থেকে ১২ গুণ করতে হবে।