নতুন প্রধান বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

ঢাকা: আপিল বিভাগের বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেন প্রধান বিচারক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তাকে দেশের ২২তম প্রধান বিচারক নিয়োগের আদেশে আজ জুমুয়াবার সই করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। আগামীকাল শনিবার হবে তার শপথ অনুষ্ঠান।
এরপর বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে বিচারক আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে।

আড়াই মাস আগে বিচারক এস কে সিনহার পদত্যাগের পর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক হিসেবে প্রধান বিচারকর দায়িত্ব পালন করছিলেন বিচারক ওয়াহহাব মিঞা।
বিচারক হিসেবে ওয়াহহাব মিঞার চাকরির বয়স আছে আর ১০ মাস। অন্যদিকে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের চাকরি আছে আরও তিন বছর।

নানা নাটকীয়তার মধ্যে বিচারক এস কে সিনহা গত নভেম্বরে পদত্যাগ করার পর থেকে প্রধান বিচারকর পদটি শূন্য।
রাষ্ট্রপতি তখন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে দায়িত্বটি পালন করে যেতে বলেন।
সময় গড়ালেও প্রধান বিচারক নিয়োগ না হওয়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রতিনিয়ত প্রশ্নের মুখে পড়ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক; এটা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার’ বলে প্রশ্ন এড়াচ্ছিলেন তিনি।

আজ জুমুয়াবার দুপুরে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় বলেন, আমার মনে হয় মহামান্য রাষ্ট্রপতি আজকেই কিছুক্ষণের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধান বিচারকর নাম ঘোষণা করবেন।
এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বঙ্গভবন থেকে তা নিশ্চিত করা হয়।

রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীন বলেছেন, নতুন প্রধান বিচারক হিসেবে বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নিয়োগের আদেশে রাষ্ট্রপতি সই করেছেন।
বিচারক ওয়াহহাব মিঞার দুই বছর পর ২০০১ সালের শুরুতে হাই কোর্ট বিভাগে বিচারকের দায়িত্ব শুরু করেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়া সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিএনপি সরকার আমলে ২০০৩ সালে হাই কোর্টের স্থায়ী বিচারক হন। ২০১১ সালে তিনি আপিল বিভাগের বিচারক পদে উন্নীত হন।
বিচারক হিসেবে কাজ শুরুর আগে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করেছিলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বিএসসি ডিগ্রি নেয়ার পর এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে ১৯৮১ সালে আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি। তার দুই বছর পর ওকালতি শুরু করেন হাই কোর্টে।

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি গঠিত দুটি সার্চ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
আপিল বিভাগে এখন যে পাঁচজন বিচারক রয়েছেন, তার মধ্যে আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা জ্যেষ্ঠতম। তার পরেই বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। জ্যেষ্ঠতার ক্রমে এরপরে রয়েছেন বিচারক ইমান আলী, বিচারক হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারক মির্জা হোসেইন হায়দার।

বয়সসীমা অনুযায়ী বিচারক আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়ার দায়িত্বপালনের সময়সীমা ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। আর বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সময়সীমা ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিচারক ইমান আলী অবসরে যাবেন। বিচারক হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাবেন ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এবং বিচারক মির্জা হোসেইন হায়দার অবসরে যাবেন ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।