২০১৮ সালের আগে সন্তান ধারণে মানা

আগামী দুই বছরের মধ্যে সন্তান ধারণ না করতে মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরের নারীদের পরামর্শ দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশটিতে ২০১৮ সালের মধ্যে সন্তান ধারণ বিপজ্জনক বলে মনে করছে সরকার।

এল সালভাদরে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় বিকৃত মাথার শিশু জন্ম নেওয়া ঠেকাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ভাইরাসজনিত এ রোগটির ঝুঁকি কমাতে ইতিমধ্যে যেসব নারী গর্ভবতী হয়েছেন তাদের দেহ ঢেকে রাখার জন্যও বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থাকে।

উল্লেখ্য, জিকা রোগের ভাইরাস বহন করে এক ধরনের মশা এবং তা থেকেই এ রোগ মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে। জিকা ও ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ একই ধরনের। এডিস ইজিপটি মশা থেকে ছড়ানো এ ভাইরাসের নির্মম বলি হয় শিশুরা।

২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত এল সালভাদরে ৫,৩৯৭ জন জিকা ভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায় দেশটির সরকার। বৃহস্পতিবার এল সালভাদরের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক উপমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব নারী গর্ভধারণের উপযুক্ত এবং সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাদের পরামর্শ দেব চলতি বছর এবং পরের বছর পর্যন্ত গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে।’

জিকা ভাইরাস ছড়ানো এডিস মশা 

জ্বর, হাড়ের জোড়ায় ব্যাথা ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বিকৃত মাথা নিয়ে জন্ম নিতে পারে শিশু। এসব শিশুর বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি থাকে, শারীরিক বৃদ্ধি কম হয় এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। জিকা ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে ব্রাজিলে। দেশটিতে ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার আক্রান্ত শিশু শনাক্ত করা হয়েছে।

এল সালভাদরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, দেশের গর্ভবতী নারীদের ৯৬ শতাংশই জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে এখন পযর্ন্ত মাইসেফালি অর্থাৎ অস্বাভাবিকরকমের ছোট মাথা নিয়ে কোনও শিশুর জন্ম হয়নি।

ব্রাজিলের পরই সবচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব কলম্বিয়াতে। সেখানকার সরকারও নারীদের আপাতত সন্তানধারণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। তবে তা ছয় থেকে আট মাসের জন্য।