ভারতের অর্থনীতির করুণ চিত্র: রপ্তানিতে ভাটা, চাকুরী হারানোর সংখ্যা বাড়ছেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের অর্থনৈতিক রেকর্ড বলছে হিন্দুত্ববাদী মোদির সাত বছরে ভারতের হতাশাকেই আরও উস্কে দিয়েছে।

মোদী ২০২৫ সালের মধ্যে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলো ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা মুদ্রাস্ফীতির সাথে সমন্বয়ের পরেও কমবেশি ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কিন্তু করোনা পূর্ববর্তী পর্যালোচনায় দেখা গেছে সেটি সর্বোচ্চ আড়াই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। করোনার কারণে কমতে পারে আরও অন্তত ২-৩শ বিলিয়ন ডলার।
মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, তেলের বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধিও এখন একটি বড় উদ্বেগের বিষয় বলে বলছে অর্থনীতিবিদ অজিত রানাদে।

তবে এমন পরিস্থিতির জন্য কোভিডই এককভাবে দায়ী নয়।

মোদী যখন ক্ষমতায় আসে তখন ভারতের জিডিপি ছিলো ৭-৮ শতাংশ, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ তিন মাসে সেটি নেমে আসে ৩.১ শতাংশে।

২০১৬ সালের আলোচিত মুদ্রা নিষেধাজ্ঞা যা অর্থ প্রবাহ থেকে ৮৬ শতাংশ নগদ অর্থ সরিয়ে নেয়, আর ‘গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স’ বা জিএসটি নামে নতুন এক কর ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় আঘাত করে। আর এগুলোই নতুন বড় বড় সমস্যার সূত্রপাত করে।

চাকুরী হারানোর সংখ্যা বাড়ছেই:

সেন্টার ফর মনিটরিং অব দা ইন্ডিয়ান ইকোনমির সিইও মহেশ ভায়াস বলছে, ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো ২০১১-১২ সাল থেকে বিনিয়োগের নিম্মমুখী প্রবণতা। “এরপর ২০১৬ সাল থেকে আমাদের আরও কয়েকটি অর্থনৈতিক আঘাত সইতে হয়েছে”।

মুদ্রা নিষেধাজ্ঞা, জিএসটি ও মাঝে মধ্যে লকডাউন- এসব কিছুই কর্মসংস্থান কমিয়েছে।

বেকারত্ব ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয় ২০১৭-১৮ সালে। আর ২০২১ সালের শুরুতে এসে অন্তত আড়াই কোটি মানুষ কাজ হারায় আর দারিদ্রসীমায় ঢুকে যায় আরও সাড়ে সাত কোটি মানুষ।

একই সময়ে প্রতি বছর যে ২ কোটি কাজের সুযোগ তৈরি করা দরকার সেখান থেকেও অনেক দূরে মোদী সরকার।

রপ্তানিতে ভাটা:

বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্য ছিলো এ খাত থেকে জিডিপির ২৫ শতাংশ নিশ্চিত করা কিন্তু গত বছরে এটি আটকে আছে পনের শতাংশে।

আর সবচেয়ে খারাপ খবর হলো এ খাতে কাজের সংস্থান গত পাঁচ বছরে কমে অর্ধেক হয়েছে।

এক দশক ধরে রপ্তানি আটকে আছে তিনশ বিলিয়ন ডলারের আশেপাশে।

বরং প্রধানমন্ত্রী মোদীর সময়েই বাংলাদেশের মতো ছোট কিছু প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে কিছু বাজারের অংশীদারিত্ব ক্রমান্বয়ে হারিয়েছে ভারত।

অর্থনীতিবিদরা অনেকেই মোদীর লাখ লাখ নতুন টয়লেট তৈরি করা, গৃহ ঋণ, গরীবের জন্য গ্যাস ও পানিতে ভর্তুকি- এগুলোর প্রশংসা করে। যদিও বহু টয়লেটই ব্যবহৃত হচ্ছে না বা পানি সরবরাহ নেই আর ভর্তুকির যে সুবিধা পেত মানুষ তাকে সংকটে ফেলেছে তেলের দাম বৃদ্ধি।