পুঁজিবাজার নিয়ে যা বললেন গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক :আন্তর্জাতিক উদীয়মান বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের মূলধন বাজার এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আগামীতে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে এবং বাজারে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বুধবার (৩০ জানুয়ারি) এ আশার কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

গভর্নর বলেন, ‘কর্পোরেট খাতের অত্যধিক ব্যাংকনির্ভর মেয়াদি অর্থায়ন কমাতে মূলধন বাজারে বন্ড ইস্যূ করে অর্থায়ন এখন সময়ের দাবি। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশী দেশের মূলধন বাজার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে বিধিব্যবস্থা প্রচলন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মূলধন বাজারের সূচকের গতিধারা এখন আন্তর্জাতিক উদীয়মান পুঁজিবাজারের সূচকের গতিধারার সঙ্গে বহুলাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা মূলধন বাজারে বৈদেশিক পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বাড়াবে। একই সঙ্গে আমাদের মূলধন বাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধি করবে।’

গণচীনের কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট হবার সূত্রে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বেশ বেড়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগটি ছাড়াও নতুন বহুজাতিক অবকাঠামো বিনিয়োগ সচ্ছল দেশগুলোর সভরেন ওয়েলথ ফান্ড বা রাষ্ট্রীয় সম্পদ তহবিল, খ্যাতনামা বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আমাদের আর্থিকখাত প্রতিষ্ঠানগুলোর এবং প্রকৃত খাতের বড় কর্পোরেটগুলোর সম্পর্ক করতে পারে।’ এতে করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ দ্রুত বাড়াতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে প্রত্যাশার কথা জানান গভর্নর।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-জুন সময়ে মুদ্রা ও আর্থিকনীতি কার্যক্রমের সামগ্রিক সফলতার প্রেক্ষাপটে নতুন মুদ্রানীতিতে বড় কোনো পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হয়নি বলে জানিয়েছেন গভর্নর ফজলে করিব। তিনি বলেন, ‘নতুন মুদ্রানীতিতে রেপো (পুনঃ ক্রয় চুক্তি) ও রিভার্স রেপো সুদহার ৬ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৯ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।’

তবে অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতির গতিধারা বিবেচনায় নিয়ে নতুন মুদ্রানীতিতে জুন শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আগের ৮ দশমিক ৫ এবং ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে সংশোধন করে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৯ এবং ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে বলে জানান গভর্নর।

গভর্নর ফিজলে কবির বলেন, ‘অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু ডিসেম্বর শেষে দেখা যায়, এ খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যের চেয়ে অনেক কম হয়েছে; ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।’ সদ্যসমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য অনিশ্চয়তার উৎকণ্ঠা এর একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৬ শতাংশ লক্ষের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান ফজলে কবির। তিনি বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা করা হয়েছে।’