পতাকা বৈঠকের পরও সীমান্তে সেনা বাড়িয়েছে মিয়ানমার

ঢাকা: বান্দরবান ঘুমধুম সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে পতাকা বৈঠকের পরও আবার তমব্রু সীমান্তে ৭ ট্রাক সেনা বৃদ্ধি করেছে বৌদ্ধ মগ অধ্যুষিত রাষ্ট্র মিয়ানমার। তবে গত শুক্রবার রাতে আর ফাঁকা গুলির ঘটনা ঘটেনি। আজ শনিবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও এখনও আতঙ্ক কাটেনি নো-ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের।

গত কয়েকদিন ধরে চলা সীমান্ত উত্তেজনায় মিয়ানমারের অতিরিক্ত সেনা সমাবেশের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সামরিক বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর দৃশ্যমান শক্তি বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও বিজিবি থেকে তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। মিয়ানমারের অতিরিক্ত আরো সৈন্য সমাবেশের পর কি ঘটতে যাচ্ছে সে দিকে নজর সবার।

তমব্রু সীমান্তে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের নেতা নুরু বলেন, ১ মার্চ থেকে এখানে আমাদের ক্যাম্পটিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে। গত শুক্রবার সকালে তারা চলে যাওয়ার পর আবার বিকালে ফিরে এসেছে। কিন্তু এবার কোনও ফাঁকা গুলি করেনি। তবে তাদের টহল দেখে আমাদের এখানে থাকা সব রোহিঙ্গা আতঙ্কে আছে। আমাদের এখান থেকে সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে গেলে ভালো হতো।

সীমান্তে হঠাৎ করে মিয়ানমার সেনা সদস্য বৃদ্ধি ও রাতে কয়েক দফা ফাঁকা গুলি বর্ষণের ঘটনায় গত শুক্রবার (২ মার্চ) সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সরওয়ার কামালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টার সময় ঘুমধুম সীমান্তের ২২নং পিলারের কাছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ডের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠকের পরপরই ফের মিয়ানমার সেনা বৃদ্ধি করার ফলে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে তমব্রু সীমান্তে।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেছে, মিয়ানমার সীমান্তে সেনা বৃদ্ধি করা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এতে আমাদের কিছুই করার নেই। সেনা বৃদ্ধির ফলে আমাদের বা নো-ম্যানসে থাকা রোহিঙ্গাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

সীমান্তের ঢেকিবুনিয়ার ২২ নং পিলারের কাছে গত জুমুয়াবারের বৈঠকে বাংলাদেশ ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ৭ সদস্যের নেতৃত্ব দেন লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান এবং মিয়ানমার বিজিপি’র পক্ষে ব্যাটেলিয়ান কমান্ডার লে. কর্নেল সোজায়া লিং। মিয়ানমার এই বৈঠকে দাবি করেছে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যই নাকি তারা সীমান্তে বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে।