এশিয়ার বাজারে কমে এসেছে চালের দাম

ডেস্ক: এশিয়ার রফতানিকারক দেশগুলোয় আগে থেকেই চালের দাম কমতির দিকে ছিল। সর্বশেষ সপ্তাহে খাদ্যপণ্যটির দরপতন আরো জোরদার হয়েছে। এ সময় ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম—তিনটি দেশেই চালের দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমে এসেছে। মূলত চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়তির দিকে থাকায় এশিয়ার বাজারে চালের দামে ধারাবাহিক পতন বজায় রয়েছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার ও রয়টার্স।

চীনের পর ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ। তবে খাদ্যপণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় ভারত শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। সর্বশেষ সপ্তাহে ভারতের বাজারে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৩৭৬-৩৮২ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও ভারতে প্রতি টন রফতানিযোগ্য চাল ৩৭৯-৩৮৫ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটিতে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৩ ডলার কমেছে। আর দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটিতে চালের দাম কমেছে টনপ্রতি সর্বোচ্চ ১২ ডলার।

ভারতের বাজারে রফতানিযোগ্য চালের দরপতনের পেছনে চাহিদা কম থাকা, বাড়তি উৎপাদনের সম্ভাবনা এবং রুপির বিনিময় মূল্য কমে যাওয়াকে চিহ্নিত করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্র প্রদেশের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে রফতানি হওয়া চালের বড় ক্রেতা এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো। জুলাই ও আগস্টে ভারত থেকে এসব দেশে চাল রফতানি বাড়তির দিকে ছিল। সেই তুলনায় সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যটির রফতানি চাহিদা রয়েছে তুলনামূলক কম। স্বাভাবিকভাবে চাহিদায় মন্দা ভাব ভারতের বাজারে রফতানিযোগ্য চালের দাম কমিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে মুদ্রাবাজারে রুপির তুলনামূলক দুর্বল অবস্থান খাদ্যপণ্যটির দাম কমিয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ জুলাই শুরু হওয়া ২০২০-২১ মৌসুমে (খরিফ) ভারতে সব মিলিয়ে ১০ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত পাঁচ মৌসুমের গড়ের তুলনায় এবারের খরিফ মৌসুমে ভারতে ধান উৎপাদন বাড়তে পারে ৬৭ লাখ টন। গত পাঁচ খরিফ মৌসুমে দেশটিতে গড়ে ৯ কোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ পূর্বাভাস সত্য হলে ভারতের বাজারে দীর্ঘমেয়াদে মন্দার মুখে পড়তে পারে চালের দাম।

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ থাইল্যান্ড। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটির বাজারে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৪৭২-৪৭৭ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও থাইল্যান্ডে প্রতি টন রফতানিযোগ্য চাল ৪৭৫-৪৯৫ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটিতে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম টনপ্রতি সর্বোচ্চ ১৮ ডলার কমেছে। আর দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশটিতে খাদ্যপণ্যটির দাম কমেছে টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৩১ ডলার।

একই চিত্র দেখা গেছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চাল রফতানিকারক দেশ ভিয়েতনামেও। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটির বাজারে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের সর্বনিম্ন দাম টনপ্রতি ৪৬০ ডলারে নেমে এসেছে। এর আগের সপ্তাহেও ভিয়েতনামে প্রতি টন রফতানিযোগ্য চাল ৪৭০-৪৭৫ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।