নিয়ম ভাঙলেন বিচারক

মামলা দায়ের করতে আসা বাদীর জবানবন্দি আংশিক গ্রহণ করে পরের দিনের জন্য রেখে দিয়ে নিয়ম ভেঙেছেন ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম। অথচ বিচারক যা করলেন সেটা আইনসিদ্ধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিমকোর্টের বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী ও ফৌজদারী আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী।

মামলা দায়ের করতে আসা বাদীর জবানবন্দি আংশিক গ্রহণ করে পরের দিনের জন্য রেখে দেয়ার কোনো আইনগত সুযোগ আছে কি না এমন প্রশ্নে অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘আইনে এরকম কোনো সুযোগ নেই। এরকম অভিযোগে কেউ মামলা করতে এলে বিচারক সরাসরি নিজে আমলে নিতে পারেন অথবা বাদীর জবানবন্দি নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট পাঠিয়ে দেবেন প্রতিবেদনের জন্য। এর অন্যথা করার কোনো সুযোগ নেই। এক কথায় বিচারক যা করলেন সেটা আইনসিদ্ধ নয়।’

এক নারীকে শ্লীলতাহানির দায়ে ৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলে এমন ঘটনা ঘটে। শিরিনা আক্তার শীলা নামে এক নারী বাদী হয়ে বুধবার ঢাকার ২ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (পরিদর্শক) অবনী শঙ্কর, উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম, এসআই জামান, কনস্টেবল দেবাশীষ ও মুগদা থানার এসআই আবদুল কাদেরকে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার উত্তর কুতুবখালির একটি বাসায় ওই নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনী শঙ্কর। এ সময় তার সঙ্গে আরো ৪ পুলিশ সদস্য জড়িত ছিলেন বলেও অভিযোগে বলা হয়। বাদীর আইনজীবী শহীদুল হক মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শহীদুল হক জানান, ট্রাইব্যুনালের বিচারক বাদীর আংশিক জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। তবে আদালতে এখনো এই মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (২১ জানুয়ারি) বাদীর বাকি জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলা গ্রহণের বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত।’

এদিকে মামলা দায়েরের খবর পেয়ে ট্রাইব্যুনালে ছুটে আসেন যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনী শঙ্কর। বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা তাকে স্টেনোগ্রাফারের রুমে বসে থাকতে দেখেন। অবশ্য সাংবাদিকদের দেখে দ্রুতই ট্রাইব্যুনাল থেকে সড়ে পড়েন ওই ওসি।