নওগাঁয় চুনাপাথরের নিচে কয়লার সম্ভাবনা দেখছেন আবিষ্কারকরা

নিউজ নাইন২৪ডটকম, নওগাঁ: নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় আবিষ্কৃত দেশের বৃহত্তম চুনাপাথর খনির নিচে কয়লা থাকার সম্ভাবনা দেখছেন আবিষ্কারকরা। খনন কাজে নিয়োজিত ড্রিলিং প্রকৌশলী মঈনউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, চুনাপাথর খনির নিচের স্তরে কয়লা থাকে। তারা সেই কয়লার অনুসন্ধানে খনন কাজ চালিয়ে যাবেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২ হাজার ২৭৫ ফুট খনন করা হয়েছে। আগামী দুই মাস খনন কাজ অব্যাহত থাকবে।

ভূ-তাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে ড্রিলিং করে নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার তাজপুরে চুনাপাথরের সন্ধান পাওয়া গেছে। যার পরিমাণ প্রায় দুই হাজার মিলিয়ন মেট্রিক টনের বেশি। খনন কাজ পরিচালিত হচ্ছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে। কয়লার সন্ধান পাওয়া গেলে পরবর্তী কার্যক্রম ঠিক করা হবে বলেও জানিয়েছেন খনন কাজের তদারকিতে থাকা ড্রিলিং প্রকৌশলীরা। এরই মধ্যে সদ্য আবিষ্কৃত এই চুনাপাথর খনিকে ঘিরে এই অঞ্চলে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের আশা করা হচ্ছে। তবে জমির ন্যায্যমূল্য না পাওয়া নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন জমি মালিকরা। খনিজ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, খনি খননের কাজে প্রথম পর্যায়ে ১ একর জায়গা বরাদ্দ নিয়েছে সরকার। পরবর্তীকালে এর আওতা বাড়ানো হবে। আর এসব জমির মালিকদের মূল্য আগামী এক বছরে পরিশোধ করার কথা রয়েছে।

ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নিহাল উদ্দিন বলেন, খনন কার্যক্রম প্রায় এক কিলোমিটার গভীরতায় দু’মাস ধরে চলবে। তাদের নির্দিষ্ট ভূ-তাত্ত্বিক ফরমেশন রয়েছে। সেটি পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান জানান, বদলগাছী উপজেলার তাজপুরে চুনাপাথরের খনি আবিষ্কার হওয়ায় সেখানে কয়লা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদি কয়লার খনিও পাওয়া যায়, তাহলে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। এলাকায় ভারি শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। লোকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।

চুনাপাথর পাওয়ায় এলাকাবাসী খুশি হলেও জমির ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আতঙ্কে আছেন অনেকে। স্থানীয়রা জমির ন্যায্যমূল্য ও এলাকার উন্নয়নের জন্যে আয়কৃত অর্থের একটা অংশের দাবি জানিয়েছেন। গত ২ বছর ধরে বগুড়ার সান্তাহার, জয়পুরহাটের তিলকপুর, আক্কেলপুর এবং নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা জুড়ে বিশাল এলাকায় ভূ-তাত্ত্বিক তথ্য অনুসন্ধান ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে তাজপুরে খনিজের বেসিনের মতো সেভ (সেন্টার) আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই সম্পদের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করার জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয় খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে। এ বছর জানুয়ারিতে-(২০১৬) মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। এরপর গত ২০ ফেব্রæয়ারি শুরু করে ভূ-তাত্ত্বিক তথ্য অনুসন্ধানের খনন কাজ। প্রায় দুই মাসে ২ হাজার ২৪৫ ফুট খনন শেষ ঢাকায় নমুনা পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ এলাকার ৫০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে চুনাপাথর পাওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যার পরিমাণ দুই হাজার মিলিয়ন মেট্রিক টনের বেশি বলে জানিয়েছেন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নিহাল।