তীব্র দাবদাহে ‘অগ্নিকুন্ড’ আর্জেন্টিনা

তীব্র দাবদাহে ‘অগ্নিকুন্ড’ আর্জেন্টিনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস টপকে যাওয়ায় ঐতিহাসিক এক দাবদাহের মুখোমুখি হতে হচ্ছে দক্ষিণ গোলার্ধের আর্জেন্টিনাকে।

ভয়াবহ তাপপ্রবাহ গত মঙ্গলবার দেশটিকে বেশ কিছু সময়ের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থানে পরিণত করেছিল, এতে বৈদ্যুতিক গ্রিডগুলোর ওপর প্রবল চাপ পড়েছে এবং বাসিন্দাদের ছায়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটির অনেক অংশে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছে যাওয়ার পর বৈদ্যুতিক গ্রিডের বিপর্যয় জনবহুল রাজধানী বুয়েনস আইরেস ও এর আশপাশের লাখ লাখ মানুষকে বিদ্যুৎহীন করে রাখে।

“বাড়িতে এসে দেখি বিদ্যুৎ নেই, ঘরটি গনগনে চুল্লি হয়ে উঠেছিল, তাই আমি বাচ্চাদের নিয়ে ওদের দাদির বাড়ি যাচ্ছি, যেখানে পুলে সাঁতার কাটতে পারবে,” বলেছে বাচ্চাদের তুলনামূলক ঠা-া কোথাও নিয়ে যেতে বের হওয়া হোসে কাসাবাল (৪২) ।

লা নিনা জাতীয় আবহাওয়ার প্যাটার্নের কারণে ইতিমধ্যে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আর্জেন্টিনায়। গত মঙ্গলবারের তাপমাত্রা অস্ট্রেলিয়ার বেশকিছু স্থানকে টপকে দেশটিকে বেশ কয়েকঘণ্টার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে তপ্ত স্থানে পরিণত করেছিল।

“এমনকী খুব সকালের দিকেও খুব গরম ছিল, তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। বাড়িতে আমার এয়ার কন্ডিশনার নেই, শুধু ফ্যান ছিল যা গরম বাতাসকে এদিক-ওদিক করেছে কেবল। এটা সহ্য করার মতো নয়,” বলেছে টিগ্রের বাসিন্দা গুস্তাভো বরিস (৩৪) ।

“এসব দিনগুলোতে আমাদের খুব সাবধান থাকতে হবে,” বলেছে বুয়েনস আইরেস শহরের মেয়র হোরাসিও রড্রিগেজ লারেতা।

আবহাওয়াবিদ লুকাস বেরেঙ্গুয়া জানায়, এবারের দাবদাহের তীব্রতা ‘ধারণারও বাইরে’ এবং এটি আর্জেন্টিনায় নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করতে পারে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্জেন্টিনা এর প্রধান নদীর বদ্বীপগুলোর চারপাশে অস্বাভাবাবিক মাত্রার দাবানল দেখেছে; গুরুত্বপূর্ণ নদী পারানার পানির স্তরও প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছেছে।

“এর সঙ্গে নিম্নচাপ সত্যিই মেরে ফেলবে আমাকে, আমি টিকতে পারবো না। আমি কয়েক লিটার পানি পান করি, আরও অনেক কিছু করি। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বিদ্যুৎ নেই। কী করবো জানি না,” বলেছে ৫৯ বছর বয়সী স্থপতি মার্তা লোরুসো।