তিস্তার পানি সরাতে আরও ২ খাল খনন করছে পশ্চিমবঙ্গ, আরও সঙ্কটে দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় কৃষি জমিতে সেচের জন্য আরও দুটি খাল খনন করতে এক হাজার একর জমির দখল পেয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগ। শুক্রবার এ দখল পেয়েছে সেচ বিভাগ। শনিবার পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, সরকারের এ পদক্ষেপের ফলে জলপাইগুড়ি ও কোচ বিহার এলাকার আরও অনেক কৃষিজমি সেচের আওতায় আসবে। তবে নতুন খাল খননের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে ক্ষুব্ধ করবে। কারণ দুই দশক ধরে তিস্তার পানি বন্টনের ন্যায্য হিস্যা দাবি করা বাংলাদেশ খাল খননের ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানি কম পেতে পারে।

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতিতে সেচ বিভাগের কাছে জমির মালিকানা হস্তান্তর করে জলপাইগুড়ির জেলা প্রশাসন । এ জমির মাধ্যমে তিস্তার পূর্ব তীরে দুটি খাল খনন করতে পারবে প্রশাসন। জলপাইগুড়ি জেলা দিয়ে প্রবাহিত জলঢাকার নদীর পানিপ্রবাহও খালের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গ সেচ বিভাগের সূত্র বলেছে, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিস্তা ও জলঢাকার পানি আনার জন্য কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল খনন করা হবে। আরেকটি খালের দৈর্ঘ্য হবে ১৫ কিলোমিটার, যেটি তিস্তার বাম তীরবর্তী এলাকায় খনন করা হবে।’

প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, খাল দুটি খনন করা হলে প্রায় এক লাখ কৃষক সেচসুবিধার আওতায় আসবেন। ব্যারাজটি জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবায় অবস্থিত।

এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘মোট কতটুকু কৃষি এলাকা খালগুলি থেকে উপকৃত হবে তা সেচ বিভাগ যথাসময়ে মূল্যায়ন করবে।’

উত্তরবঙ্গের ৯ লাখ ২২ হাজার হেক্টর কৃষিজমিকে সেচের আওতায় আনতে ১৯৭৫ সালে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পটি শুরু হয়। এই প্রকল্পের আওতায় খালের মাধ্যমে তিস্তার পানি নদীর দুই তীরের কৃষিজমিতে সরবরাহের পরিকল্পনা হয়।

শিলিগুড়ির নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটির ভূগোল বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, ‘এখন তার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সরকার সেচ নেটওয়ার্কের আওতা বাড়াচ্ছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নতুন খালের মধ্য দিয়ে তিস্তা থেকে আরও বেশি পানি সরিয়ে নেওয়া হবে। এর মানে, শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ আরও কম পানি পাবে।’

সূত্র জানিয়েছে, গ্রীষ্মকালে তিস্তায় প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০০ ঘনমিটার পানির প্রবাহ থাকে। তবে ভারত ও বাংলাদেশের কৃষিজমিতে সেচের জন্য প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার পানির প্রবাহ প্রয়োজন।