জানুয়ারিতে দ্বিগুণ হয়েছে ব্রিটিশ খুচরা পণ্যের মূল্যস্ফীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বারবার কভিডের প্রাদুর্ভাব, উচ্চমূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ঘাটতি দেশটির অর্থনীতিকে ধীর করে দিয়েছে। এ অবস্থায় জানুয়ারিতে আবার দেশটির খুচরা পণ্যের মূল্যস্ফীতি আগের মাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার এ গতি প্রায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতিতে জীবনযাত্রার উচ্চব্যয় মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে অনেক ব্রিটিশ পরিবার।

যুক্তরাজ্যের খুচরা ব্যবসায় বাণিজ্য সমিতি ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (বিআরসি) ও বাজার গবেষণা সংস্থা নিলসেন আইকিউর সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে খুচরা পণ্যের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ০.৮ শতাংশ থেকে জানুয়ারিতে ১.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। গত মাসে খাদ্যের দাম ২.৭ শতাংশ বেড়েছে। ডিসেম্বরে এ পণ্যের দাম বেড়েছিল ২.৪ শতাংশ। জানুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার এ হার ২০১৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ। তবে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়েছে খাদ্যপণ্যের বাইরের পণ্যগুলোয়। গত মাসে এ পণ্যগুলোর দাম ০.৯ শতাংশ বেড়েছে।

বিআরসির প্রধান নির্বাহী হ্যালেন ডিকিনসন বলেছে, জানুয়ারিতে খুচরা পণ্যগুলোর মূল্যস্ফীতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এক্ষেত্রে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে আসবাবপত্র ও মেঝের কাঠজাতীয় পণ্যগুলোর উচ্চ চাহিদায় দাম বেড়েছে। কারণ ক্রমবর্ধমান জ্বালানি ব্যয় পণ্য পরিবহন খরচকে আরো ব্যয়বহুল করে তুলেছে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের দাম বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ পণ্যগুলোর দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এক্ষেত্রে ফসলের উৎপাদন কমে যাওয়া, শ্রমঘাটতি ও বিশ্বজুড়ে খাদ্যের দাম বাড়ার মতো বিষয়গুলো প্রভাব ফেলেছে।

অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস অনুসারে, যুক্তরাজ্যে টানা চতুর্থ মাসের মতো আসবাবের খুচরা দাম বেড়েছে। ডিসেম্বরে এসব পণ্যের দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেকর্ড ১২.৫ শতাংশ বেড়েছে। কাঠ ও জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন ও শ্রম ব্যয় বেড়েছে। এটি বিভিন্ন ধরনের নির্মাতা ও খুচরা বিক্রেতার ওপর প্রভাব ফেলেছে। কাঁচামাল ও পরিবহন ব্যয় কার্পেটসহ ফ্লোরিংয়ের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

গ্যাস ও বিদ্যুতের মতো পণ্যে ব্যয় বাড়ার কারণে ব্রিটিশ পরিবারগুলোর বিল আরো বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করে হ্যালেন ডিকিনসন। অনেক পরিবারের জন্য এ উচ্চব্যয় বহন করা কঠিন হবে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে। ব্যয় কমানোর জন্য খুচরা বিক্রেতারা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। তবে ভবিষ্যতের কোনো বৃদ্ধি থেকে ভোক্তাদের রক্ষা করা অসম্ভব হবে। যেহেতু পণ্য ও জ্বালানির দাম এবং পরিবহন ব্যয় এখনো উর্ধ্বমুখী রয়েছে। সুতরাং ভবিষ্যতে খুচরা পণ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

খাদ্য দারিদ্র্য নিয়ে প্রচারণা চালানো জ্যাক মনরো বলেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সরকারি মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে বেশি বাড়ছে। আর এ পরিস্থিতি দরিদ্রদের ওপর প্রভাব ফেলছে।