ইরানের ড্রোন শিল্পের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে বেশ নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। আর এ কাজে ব্যবহার করা ড্রোনের মধ্যে রয়েছে ইরানি ড্রোনও। মূলত কম দামী এবং প্রাণঘাতী ড্রোন উৎপাদনে ইরানের এই অগ্রযাত্রা পশ্চিমাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ইরানের ড্রোন শিল্পের অগ্রযাত্রা রুখতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞায় তেহরানের ড্রোন কর্মসূচির জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহকারী সংস্থা এবং ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ মার্চ) এক বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে, সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞায় তেহরানের যে ‘প্রকিউরমেন্ট নেটওয়ার্ক’-কে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেটি ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আর্মড ফোর্সেস লজিস্টিকস (এমওডিএএফএল)-এর পক্ষে কাজ করে।

আর এরাই মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে তত্ত্বাবধান করে থাকে।

মূলত ইউক্রেনে চলমান আগ্রাসনে রাশিয়া ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইরান রাশিয়ায় ড্রোন পাঠানোর কথা স্বীকার করলেও তেহরানের দাবি, গত বছর ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের আগেই সেগুলো (রাশিয়ায়) পাঠানো হয়েছিল।

অবশ্য ইউক্রেনে ইরান-নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করার বিষয়টি অস্বীকার করছে মস্কো। যদিও রুশ বাহিনীর হামলার কাজে ব্যবহৃত হওয়া ইরানের তৈরি বহু ড্রোন ইউক্রেনে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে এবং ধ্বংসাবশেষও উদ্ধার করা হয়েছে।

আর এই পরিস্থিতিতে ইরানের ড্রোন শিল্পকে লক্ষ্যবস্তু করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য ওয়াশিংটনের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইরানের ড্রোন শিল্পের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

মার্কিন ট্রেজারির সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইরানের প্রক্সিদের কাছে ইউএভি এবং প্রচলিত অস্ত্রের সুনিপুণ বিস্তার আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবারের নিষেধাজ্ঞায় যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ইরানভিত্তিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, এর প্রকিউরমেন্ট ফার্ম ফারাজান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনকর্পোরেশন এবং কোম্পানির ক্রয়কারী এজেন্টসহ আরও দু’টি সংস্থা রয়েছে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে তালিকায় থাকা ব্যক্তি ও সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পত্তি বা আর্থিক সম্পদের ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হবে। মার্কিন কোম্পানিগুলোকেও চিহ্নিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যবসা করা থেকে বিরত রাখা হবে।

ইরানের ড্রোন তৈরিকে টার্গেট করে নিষেধাজ্ঞা আরোপে ওয়াশিংটনের এটিই সর্বশেষ পদক্ষেপ। এর আগে ইরানের ড্রোন কর্মসূচিকে সহায়তা করে এমন সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য চীনা কোম্পানির নেটওয়ার্কের ওপর মার্চের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।