আলুতে বাম্পার ফলন, ভালো দাম পাচ্ছেন চাষীরা

আলুর আমদানি বাড়লেও দাম পাচ্ছেন না চাষিরা

বগুড়া: বগুড়ায় চলতি মৌসুমের আলু তোলার কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা। এবার জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও বেশ ভাল। বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ মণ। বর্তমানে প্রতিকেজি আলু প্রায় ১০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সব খরচ বাদে প্রতিবিঘায় ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষক পর্যায়ে লাভ হচ্ছে। তবে নিজস্ব জমির মালিকদের বেলায় লাভের পরিমাণটা আরো বেশি। সবমিলিয়ে আলুতে হাসির ঝিলিক খেলছে চাষির চোখে-মুখে।

প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছিলেন আজগর আলী। প্রতি বিঘা জমির বিপরীতে খরচ হয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে জমির বর্গাবাবদ গুণতে হয়েছে ৭ হাজার টাকা। বাকিটা বীজ, সার, ওষুধ, চাষ, পানি, বাঁধাই, লাগানো, উত্তোলন বাবদ ব্যয় হয়েছে।

আজগর আলী জানান, তার প্রতিবিঘায় ফলন হয়েছে প্রায় ১৩০ মণ। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ১০ টাকা কেজিদরে কিছু আলু বিক্রি করা হয়েছে। সেই হিসাবে প্রতিবিঘায় প্রায় ২২ হাজার টাকা করে লাভ হয়েছে।

আরেক চাষি আবু সাঈদ জানান, তিনি সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তার প্রতিবিঘায় ফলন হয়েছে ১২০ মণ। নিজের জমি হওয়ায় তার লাভ কিছুটা বেশি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে এ জেলায় ৬৭হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। এসব জমিতে চাষ করা হয়েছে কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, গ্যানোলা, লাল পাকড়ী, হাগড়াইসহ বেশ কয়েক জাতের আলু।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুই চাষী পাশাপাশি বসেছেন আলুর জমিতে। গাছ টেনে তুলছেন। মাটির নিচ থেকে বের করে আনছেন আলু। ভরছেন বাঁশের তৈরি ডালায়। বয়স্ক হলেও অনেক দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করছিলেন তারা। চোখে-মুখে ছিল হাসির ঝিলিক।

প্রায় সপ্তাহখানেক আগে ক্ষেতের আলুর আইল ভেঙে দেয়া হয়েছে। গাছগুলো মাটিতে শুয়ে পড়েছে। সেই জমির মাটির নিচ থেকে আলু উত্তোলন করছেন চাষীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের উপ-পরিচালকের হর্টিকালচার সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর কৃষিবিদ আব্দুর রহিম জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষী পর্যায়ে দামও ভাল পাচ্ছেন। প্রায় নব্বই শতাংশ জমির আলু এরই মধ্যেই উত্তোলন করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মহান আল্লাহর রহমতে এ বছর আলুর জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। ফলনও ভাল হয়েছে। কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের দামও ভাল পাচ্ছেন। এসব বিবেচনায় আগামী মৌসুমে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে চাষীরা আলু চাষ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করে কৃষিবিদ আব্দুর রহিম।