মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে ১০৮ কোটি টাকা

ঢাকা: মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্পের আওতায় শান্তিনগর থেকে মালিবাগ, রাজারবাগ ও মৌচাক হয়ে রামপুরা পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ ব্যয় ১০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে টেন্ডার মূল্য ছিল ৩৪৩ কোটি ৭০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। ব্যয় বেড়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এখন ব্যয় হবে ৪৫২ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত ঢাকা মহানগরীতে ফ্লাইওভার ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৭ সালের ৩০ জুনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে জনদুর্ভোগও বেড়েছে কয়েকগুণ। এরই মধ্যে প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ানো সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এমসিসি-তমা জেভি লিমিটেড।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত করা হয়েছে। ডব্লিউ-৪ প্যাকেজের আওতায় তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় থেকে মগবাজার মোড় হয়ে হলিফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত অংশটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য ইতোমধ্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডব্লিউ-৬ প্যাকেজের আওতায় বাংলামোটর থেকে মগবাজার ক্রসিং হয়ে মৌচাক পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বিবেচ্য ডব্লিউ-৫ প্যাকেজের আওতায় শান্তিনগর থেকে মালিবাগ, রাজারবাগ ও মৌচাক হয়ে রামপুরা পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ চলছে।

ভেরিয়েশন প্রস্তাবের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও সুবিধা সম্পর্কে স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের ডব্লিউ-৫ প্যাকেজের অওতায় রামপুরার চৌধুরী পাড়া থেকে মালিবাগ রেলক্রসিং, মৌচাক মোড় হয়ে শান্তিনগর এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইন পর্যন্ত মোট ৩ দশমিক ৯৩৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতল ও ৪ লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভারের ভূ-গর্ভস্থ সার্ভিস ইউটিলিটিজের কারণে এবং সেগুলো স্থানান্তরযোগ্য না হওয়ায় প্রতিটি ফাউন্ডেশনের পৃথক ডিজাইন করে কাজ বাস্তবায়ন করা, ভূমিকম্প সহনীয় করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কারণে ব্যয় বাড়ছে। ভেরিয়েশন ক্রয় প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে ঢাকা মহানগরীর শান্তিনগর থেকে মালিবাগ, মৌচাক মোড় হয়ে  ইস্কাটন ও রামপুরা থেকে মালিবাগ হয়ে রাজারবাগ ও শান্তিনগর এলাকার ট্যারিফ ক্যারিং ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করবে অর্থাৎ যানজট নিরসন হবে।

প্রকল্পের ব্যয় বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রকল্প এলাকায় সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ লাইন, ভূগর্ভস্থ বিভিন্ন সার্ভিস ইউটিলিটিজ যেমন পানির লাইন, স্ট্রম ওয়াটার লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন, টেলিফোন লাইন, ফাইবার অপটিক ক্যাবলস থাকার কারণে সেগুলো স্থানান্তরসহ বিভিন্ন কাজ করার কারণে ব্যয় বাড়ছে। এছাড়াও বুয়েটের পরামর্শে ভ’মিকম্প সহনের জন্য ফ্লাইওভারটি পট বেয়ারিং এবং শক ট্রান্সমিশন ইউনিট সংযোজনের ফলে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আরোপিত ভ্যাট বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বাড়ছে। আর এটা নির্মাতা সংস্থার সঙ্গে সরকারের চুক্তি অনুয়ায়ী বাড়ছে।