ঈদে সাড়ে ২৩ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য রাজধানীতে

মেয়র খোকন গতবছরের মত এবারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার এলাকার কোরবানির পশু বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার করে ফেলা হবে।

নগর ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “এরই মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ অপসারিত হয়েছে।… ১৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারিত হয়েছে। বাকিটাও অপসারণের কাজ চলছে।”

আর উত্তরের প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফা ঢাকা উত্তরের নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছি।”

অনেকে বৃহস্পতিবারও পশু কোরবানি দিচ্ছেন জানিয়ে মেয়র খোকন বলেন, “আজকে এবং আগামীকাল আরও কিছু বর্জ্য উৎপন্ন হবে। সেটা অপসারণ করে কম বেশি ২০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করব। এই শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আমাদের প্রিয় নগরবাসীর কাছে তুলে দেব।”
ঢাকা সম্পূর্ণ বর্জ্যমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা মাঠে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র।

দক্ষিণের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১৫ হাজার টনের মতো বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, আরও তিন হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করার প্রয়োজন হতে পারে।”

এ সিটি করপোরেশনে গতবছর ১৯ হাজার দুইশ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছিল জানিয়ে হারুন বলেন, “গতবছর বৃষ্টি ছিল, এবার পরিবেশ ছিল শুষ্ক। এবার দেড়-দুই হাজার মেট্রিক টন কম হবে বলে আমরা ধারণা করছি “

উত্তর সিটি করপোরেশনের জোন-২ এর সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মাসুদুর সরকার বলেন, “বৃহস্পতিবার যেসব এলাকায় কোরবানি হচ্ছে, সেসব এলাকায় সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পলিথিন ও ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ করছেন। কোরবানির পর সঙ্গে সঙ্গেই ট্রাকে করে নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

রাজধানীর মহাখালীর বিভিন্ন এলাকায় এখনও সড়কে কোরবানি পশুর রক্ত আর শুকনো বর্জ্য থাকার অভিযোগের কথা জানালে মহাখালীতে স্থাপিত উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, “কিছু কিছু ওয়ার্ডে আজকেও কোরবানি হয়েছে। রক্ত, বর্জ্য জমে থাকার অভিযোগ আমরাও শুনেছি। সড়কে ময়লা জমে থাকলে সাথে সাথেই কর্মীরা ময়লা সরিয়ে ফেলছেন।”
পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতি এড়াতে গত কয়েক বছরের মত এবারও রাজধানীতে পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের নির্দিষ্ট কিছু স্থান ঠিক করে দিয়েছিল সরকার। ঢাকা দক্ষিণে এরকম ৬২৫টি এবং উত্তরে ৫৪৯টি স্থান ঠিক করে সেখানে কোরবানির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।

উত্তরের প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, “বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে জনগণের সাড়া ছিল উৎসাহব্যঞ্জক। নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।”

তবে কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তাতে ‘আশাব্যঞ্জক’ সাড়া পাননি বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন দক্ষিণের মেয়র।

ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিনে নগরীর উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মালিবাগ, বাড্ডা, মহাখালী, সেগুনবাগিচা, সায়েন্স ল্যাব ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদুল আজহার রাতে যেসব গলিতে বর্জ্য জমে ছিল, তা সরিয়ে নিয়েছেন কর্মীরা।

নগরীর বেশকিছু এলাকায় এদিন যারা পশু কোরবানি দিয়েছেন তারা নিজ উদ্যোগেই পশুর বর্জ্য নিকটবর্তী ডাস্টবিনে নিয়ে ফেলছেন; জীবাণুনাশক দিয়ে কোরবানির স্থানটিও পরিষ্কার করে ফেলছেন দ্রুত।