মনিরামপুর হাসপাতাল: চিকিত্সক সংকটে সেবাবঞ্চিত সাড়ে ৪ লাখ মানুষ

যশোর: নিয়মিত চিকিত্সক সংকটের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে যশোরের মনিরামপুর হাসপাতাল। ফলে সাড়ে চার লক্ষাধিক মানুষের ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটির চিকিত্সাসেবা নিতে এসে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন রোগীরা। ২৬ জন চিকিত্সকের স্থলে ১৫ জন থাকলেও দুজন রয়েছেন ডেপুটেশনে। হাসপাতালটির কর্মকর্তাসহ প্রশিক্ষণে আছেন দুজন। বাকিরাও হাসপাতালে নিয়মিত নন বলে অভিযোগ রয়েছে।

রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতাল আবাসিকে থাকেন না কোনো চিকিত্সক। তাদের অধিকাংশই থাকেন যশোর জেলা শহরে। মাত্র দুজন চিকিত্সক আসেন পাশের উপজেলা কেশবপুর থেকে। এ কারণে রোগীরা সময়মতো চিকিত্সাসেবা পাচ্ছেন না।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, সহকারী সার্জন ডা. রাজীব পাল, ডা. হুমাইরা আশরাফি রয়েছেন ডেপুটেশনে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ডা. অনুপ বসু, মার্জিয়া আক্তার, জহিরুল হক ও মাহমুদুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়মিত দেখা যায় না।
হাসপাতালের অফিস সহকারীপ্রধান অশোক কুমার ঘোষ জানান, ২৬ জন ডাক্তারের স্থলে কাগজে-কলমে রয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে ডেপুটেশন ও প্রশিক্ষণে থাকায় সংকট বেড়েছে।

উপজেলার নেহালপুরের বাসিন্দা ভ্যানচালক আবদুল মমিন বলেন, হাসপাতালের টিকিট নিয়ে সকাল থেকে বসে আছি, ডাক্তার কখন আসবেন তা জানা নেই।

হাসপাতালে ভর্তি রোগী উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আরাফাত রহমানের (৪) সঙ্গে থাকা তার দাদি আয়রা বেগম জানান, গত দুদিনে হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ দেয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডা. দিলীপ কুমারসহ হাসপাতালের দু-তিনজনের নিজস্ব ক্লিনিক রয়েছে মনিরামপুর পৌর শহরে। ফলে রোগীদের এক রকম জিম্মি করে সেখানে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশ রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষাই হাসপাতালে করা হয় না। তাদের হাতে টোকেন ধরিয়ে দিয়ে পাঠানো হয় মনিরামপুর পৌর শহরের ক্লিনিকগুলোয়। এছাড়া হাসপাতালের রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটির অবস্থাও নাজুক।

এসব বিষয়ে কথা বলতে টিএইচএ ডা. দিলীপ কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শরীফুজ্জামান জানান, তিনি খণ্ডকালীন দায়িত্ব পালন করছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, অনিয়ম নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।