দ্রুত পানি বাড়ছে নদীতে কুড়িগ্রামে আগাম বন্যা

কুড়িগ্রাম: ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও দুধকুমারসহ কুড়িগ্রামের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে দেখা দিয়েছে আগাম বন্যা। প্রায় ৬ হাজার পরিবারের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পাট, সবজি, কলা ও আমন বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ধরলায় ৩৭, তিস্তায় ৩৬, দুধকুমারে ৩৫ ও ব্রহ্মপুত্রে ৪২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে। দ্রুতগতিতে পানি বাড়ার ফলে ৪টি উপজেলার ৯টি উনিয়নের ৫০টি দ্বীপচর ও চরগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

ঘর-বাড়িতে পানি ওঠায় অনেকেই চলে গেছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। তবে বেশরিভাগই মানুষ গবাদীপশু নিয়ে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। রোজার মাসে আয় রোজগার ও রান্না বন্ধ হওয়ায় কষ্টে আছেন দিনমজুুর পরিবারগুলো। প্রায় ৩ দিন পানিবন্দী থাকার পরেও এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ সহায়তা মেলেনি বন্যার্তদের ভাগ্যে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা  আব্দুল মোত্তালিব মোল্লাহ্ জানান, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলঅর জন্য তাদের কাছে ৫ লাখ টাকা ও ১০৮ মে. টন চাল রয়েছে। এই টাকায় চাল, চিড়া, চিনি, ডালসহ শুকনো খাবার কিনে দেয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব এলাকার কলা, পাট, সবজি ও আমন বীজতলাসহ বেশকিছু ফসলের ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে বন্যার পানিতে।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন ফসলের বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চরের কৃষকরা। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নওয়াবশ ও কদমতলা সবজি গ্রাম হিসেবে বিখ্যাত। এখনকার উৎপাদিত পটল, বেগুনসহ অন্যান্য সবজির উপর নির্ভরশীল কুড়িগ্রাম শহর ও আশেপাশের এলাকার মানুষ। কিন্তু বৃহষ্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে ওই দুটি গ্রামের সব সবজি ক্ষেতে পানিতে নিমজ্জিত। নওয়াবশ গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী জানান, তার ৪০ শতক জমির পটল ক্ষেতটি একমাত্র আয়ের পথ। কিন্তু ক্ষেতে এখন বুক সমান পানি। পানি দ্রুত নামলেও এই ক্ষেত বাঁচানোর আর কোন আশা নেই।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো: মকবুল হোসেন বলেন, ‘এখনও বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। দ্রুত পানি নামলে ক্ষতি নাও হতে পারে।