বাজারজাতের সুযোগ নেই অ্যালোভেরা

বাজারজাতের সুযোগ নেই অ্যালোভেরা

নিউজ ডেস্ক : বগুড়ার শাজাহানপুরে অ্যালোভেরা চাষাবাদ হলেও বাজারজাতের সুযোগ নেই। তাই প্রচুর সম্ভবনাময় ও লাভজনক এ ওষুধি গাছ চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন না। তারা বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি করতে সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সৌন্দর্য চর্চা থেকে রোগ প্রতিরোধসহ নানা জটিল রোগের প্রতিষেধক অ্যালোভেরা। পুড়ে যাওয়া স্থানে এর রস লাগিয়ে দিলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। অন্য যে কোনও ফসল বা ওষুধি গাছের চেয়ে অ্যালোভেরা চাষে বেশি লাভের সম্ভবনা থাকায় বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের মারিয়া গ্রামের কয়েকজন কৃষক এ ফসল চাষ করেছেন। তবে বাজারজাতকরণের সুযোগ না থাকায় কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

মারিয়া গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম প্রায় এক যুগ আগে তার ১২ শতক জমিতে অ্যালোভেরা চাষ শুরু করেন। নাটোর থেকে চারা সংগ্রহের পর প্রায় তিন বছর এ চারা পরিচর্যা করেছেন। এখন তিনি এক বিঘার বেশি জমিতে অ্যালভেরা চাষ করেছেন। বর্তমানে জাহিদুল ইসলাম নিজেই চারা তৈরি করে থাকেন।

তিনি জানান, নিয়মিত আগাছা দমন,চুনের পানি ছিটানো ও সার দেওয়াই এ ফসল উৎপাদনের প্রধান কাজ। চুনের পানি দিলে গাছের পাতায় দাগ হয় না। তিনি বড় ভাইয়ের পরামর্শে অ্যালোভেরা চাষ শুরু করেন। এ ফসল অন্য যেকোনও ফসলের চেয়ে বেশি ফলনশীল ও লাভজনক। এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৫০ মণ অ্যালোভেরা উৎপাদন হয়। সময়ভেদে প্রতি কেজি পাঁচ টাকা থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। এক বিঘা জমিতে অ্যালোভেরা চাষ করলে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হয়।

তার দাবি করেন,চাষাবাদ ভালো হলেও বাজারজাতকরণের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই অ্যালোভেরা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন না। হারবাল ওষুধ যারা তৈরি করেন তাদের সঙ্গেও তাদের পরিচয় নেই। তাহলে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটতো এবং এলাকার আরও অনেকে এ ব্যবসা করতেন।

একই গ্রামের ওবায়দুর রহমান জানান, তিনি প্রথমে জাহিদুলের কাছ থেকে চারা নিয়ে ১৫ শতক জমিতে অ্যালোভেরা চাষ করেছিলেন। এখন তিনি দুই বিঘার বেশি জমিতে এ ওষুধি গাছ চাষ করেন। তবে এর বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো না। সরাসরি পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির সুযোগ কম। বিভিন্ন এলাকার শরবত ব্যবসায়ী, বিউটি পারলার ও নাটোর জেলার কিছু ব্যবসায়ী তাদের কাছ থেকে অ্যালোভেরা সংগ্রহ করেন।

একই গ্রামের জাবেদ আলী শখ বলেন, প্রথমে ৮ শতক জমিতে চাষ করলেও এখন ২৪ শতক জমিতে চাষ করেন। ভালো ফলন হলেও বাজার নেই।

আমিরুল ইসলাম জানান, তারা ৪/৫ জন কৃষক অ্যালোভেরা চাষ করে থাকেন। এ ফসল ঘরে রাখা সম্ভব হয় না।তাই দ্রুত বিক্রি করতে হয়। ভালো ফলন হলেও শুধু স্থানীয় শরবত ব্যবসায়ী ও বিউটি পারলার কিনে থাকে। বাজার সৃষ্টি না হলে চাষাবাদ বাড়বে না।

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান আনোয়ারুল ইসলাম জানান, অ্যালোভেরার অনেক ভেষজ গুণ আছে। পাতার শাস পোড়াস্থানে লাগলে উপশম হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য, চর্মরোগ, যকৃতের রোগের চিকিৎসায় এর ব্যবহার করা হয়।