হঠাৎ উর্দ্ধমুখী চালের বাজার

গম ব্যবসায়ীর গোডাউনে ১২৬৬ বস্তা সরকারি চাল

ঢাকা: হঠাৎ করেই চালের দাম উর্দ্ধমুখী রাজধানীর চালের বাজার। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। চাল ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন বৈশাখে নতুন চাল  না আসা পর্যন্ত কমছে চালের দাম, বরং বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজারে চাল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে চালের এই অস্থির বাজার সম্পর্কে জানা যায়।

চাল ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেন বলেন, স্বর্ণা ও বিআর-২৮ (মোটা চাল) নামের এই চাল এক সপ্তাহ আগেই ছিল ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা, আজকে এই চালের বাজার দাম ৪২, ৪৩ টাকা। এই দামে গত সপ্তাহ  চিকন চালই পাওয়া যেত।

বাজার করতে আসা ভুক্তভোগী কাঠ মিস্ত্রি ফারুক বলেন, ভেবেছিলাম খুচরা চালের দাম বেড়েছে তাই পাইকারি নেব। এসে দেখি কোন কারণ ছাড়াই খুচরা বা পাইকারি চালের বাজারে দাম হু হু করে বাড়ছে। যা আমাদের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।

এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, এক দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

যেখানে ৫০ কেজি মোটা চালের বস্তা ছিল ১৮০০ থেকে ১৮৫০ টাকা সেখানে এর বর্তমান দাম ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা।

পাশাপাশি বেড়েছে চিকন চালের দামও। মিনিকেট জাতীয় চাল যেমন, রাজ্জাক বা মজুমদার রাইসমিলের প্রস্তুতকৃত এই চিকন চাল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৪৫০ থেকে ২৫০০ টাকা, যা দাম বৃদ্ধির আগে ছিল ২৩০০ থেকে ২৩৫০ টাকা।

চালের পাইকারি দোকান ‘বি.বারিয়া রাইস এজেন্সির’ মালিক মহসীন হোসেন বলেন, মোটা চাল কিংবা চিকন চাল, গত দুই সপ্তাহ ধরে দাম বাড়ছে, সপ্তাহে বস্তায় অন্তত ৫০ টাকা করে বেড়েছে মিল পর্যায়ে। সেই হিসাবে আমাদেরকেও দাম বাড়াতে হয়েছে, এতে যে গরীব মানুষ ভুক্তভোগী হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এই চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, মৌসুমের শেষ দিকে এসে ধান সরবরাহ কমে যাওয়ায় চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে।

মাসখানেক আগেও মোটা জাতের স্বর্ণা চালের দাম ছিলো কেজি প্রতি ২৯-৩০ টাকা। এরপর তা কয়েক দফায় বেড়েছে। অন্যদিকে মিনিকেট চালের দামও যেখানে কেজি ৪১-৪২ টাকা ছিল, বর্তমানে এ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা দরে।

এদিকে বাদামতলী-বাবুবাজার চাল আড়তদার সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক বাবর আলী মুঠোফোনে বলেন, বৈশাখ মাসে নতুন চাল আসার আগের পর্যন্ত চালের বাজার কমার কোন সম্ভাবনা আমরা দেখছি না। তবে চালের দাম বাড়ার সম্ভাবনাটাই বেশি রয়েছে। যদিও বাজারে সেই অর্থে চালের সংকট নেই।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সুমন মেহেদী বলেন, মূলত কৃষকদের সুরক্ষা দিতে চলতি সময়ে চাল আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ মৌসুমে সরকারি চাল ক্রয়ের মূল্য ধরা হয়েছে কেজিপ্রতি ৩২ টাকা, যা উৎপাদন খরচের চেয়ে কেজিতে পাঁচ টাকা বেশি। এ দু’টি কারণেই চালের দাম বাড়ছে।