শেয়ারবাজা‌রে হঠাৎ বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : লকডাউনের ধাক্কায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। গেল (২০১৯-২০) অর্থবছর শেষে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে ৩৬.১৭ শতাংশ। তবে উল্টো চিত্র শেয়ারবাজারে। একই সময় শেয়ারবাজরে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬১ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-জুন সময়ের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট) ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, লকডাউনের কারনে অবরুদ্ধ হ‌য়ে প‌ড়ে পু‌রো বিশ্ব। অর্থনীতিতে চলছে মন্দাভাব। এসব কারণে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। তবে বিদেশি বিনিয়োগ না বাড়লে দেশে সার্বিক বিনিয়োগ বাড়বে না। তাই মহামারির অর্থনৈতিক ক্ষতি পোষাতে যেকোনো মূল্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল অর্থবছরে দেশে এফডিআই এসেছে ৩১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ১৮০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই কমেছে ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ ও নিট কমেছে ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

আগের অর্থবছরে (২০১৮-১৯) এফডিআই এসেছিল ৪৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং নিট এফডিআই এসেছিল ২৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

এদিকে গত অর্থবছরে দেশের শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। সেই হিসাবে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট বেড়েছে ৬১ দশমিক ৪০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাস (জুলাই-মে) সময়ে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট ছিল মাত্র এক কোটি ২০ ডলার। কিন্তু অর্থবছরের শেষ মাস জুনে এসে তা দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। অর্থাৎ এক মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশিরা বিনিয়োগ করেছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

জানা গেছে, আস্থার সংকট ও ধারাবাহিক দর পতনের কারণে দেশের শেয়ারবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থায় নতুন নেতৃত্ব আসায় এখন বিনিয়োগকারীরা বিষয়গুলোকে ইতিবাচক দেখছে। এসব কারণে আস্থা ফিরছে বাজারে। বাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগ।

চলতি বছরের মে মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামকে নিয়োগ দেয় সরকার। চেয়ারম্যানের পর বিএসইসিতে নতুন দুই কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়।
তারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান।