ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির খবরে শঙ্কাগ্রস্ত চাষীরা

পেঁয়াজের বিক্রি কমেছে, কমেনি দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: কিছুদিন আগেই সারাদেশে পেঁয়াজ নিয়ে ভয়াবহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো। দেশীয় পেঁয়াজ উৎপাদনে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং ভারতের উপর নির্ভরশীলতার সুযোগে দেশীয় সিন্ডিকেটরা পেঁয়াজের দাম ২ থেকে ৩ গুন বাড়িয়ে দেয়। তবে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম নি¤œমুখী। সেইসাথে সারাদেশে উৎপাদিত দেশীয় পেঁয়াজ তোলারও সময় হয়েছে। আর ঠিক এই সময়েই সরকারিভাবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির চিন্তা করা হচ্ছে। যাতে শঙ্কাগ্রস্থ লাখো পেঁয়াজ চাষী।

ঢাকার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের খরচ হবে ১২ টাকার মতো। ফলে এখনকার দরও কৃষকের জন্য লাভজনক। চিন্তার বিষয় হলো, ভারতীয় পেঁয়াজ এলে ব্যাপক আকারে দরপতন হবে। ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হবে কৃষক।

জানা গেছে, দেশে পেঁয়াজের আমদানিনির্ভরতা কমাতে চলতি বছর পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৪ লাখ টন করে সরকার, যা মোট চাহিদার প্রায় সমান। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনেও উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আমদানিনির্ভরতা কমাতে ও কৃষকদের লাভবান করতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে না বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বিভিন্ন সময়ে এমন বক্তব্যও দিয়েছেন। তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনে পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের উদ্যোগের কথাও জানান। মন্ত্রীর এমন বক্তব্য ও সরকারের উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তে চাষিরা এ বছর পেঁয়াজ উৎপাদনে উৎসাহ দেখান। ফলে অনেক নতুন চাষিও এ বছর পেঁয়াজ আবাদ করেন। কিন্তু ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম পড়তে থাকায় লোকসান আতঙ্কে পড়েছেন তারা।

ভারতের পেঁয়াজ আমদানির বিরোধিতা করে চাষীরা জানিয়েছেন, এ বছর পেঁয়াজের বীজের দাম বেশি ছিল। সরকার ভারতের পেঁয়াজ আনবে না এমন খবরে আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ভারতের পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম কমে যাচ্ছে। আমদানি হলে অবস্থা আরও শোচনীয় হবে। এ অবস্থা সৃষ্টি হলে পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব হবে না। আমরা চাই প্রয়োজনে সরকার দাম নির্ধারণ করে দিক। কিন্তু আমরা চাই ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকুক। কম লাভ হলেও সরকার চাইলে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন করতেও রাজি আছি।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতের পেঁয়াজ আসার খবরে দাম প্রতিদিনই কমছে। বর্তমানে যে দাম আছে সেটা স্বস্তির হলেও ভারতের পেঁয়াজ আমদানি হলে আর স্বস্তি থাকবে না। তখন দাম একেবারেই কমে যাবে। এতে কৃষকের ক্ষতি হবে। আমার ধারণা, দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে তাতে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির কোনো দরকার নেই।