দিনাজপুরে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

দিনাজপুরে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

দিনাজপুর সংবাদদাতা: দিনাজপুরের খানসামায় মাটির উর্বরতার সঙ্গে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় অন্যান্য সবজির পাশাপাশি রবি শস্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলতে উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে। সূর্যমুখী ফুল চাষে অপার সম্ভবনা থাকায় কৃষকদের আগ্রহও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলার দুহশুহ, নেউলা, হোসেনপুর ও ভান্ডারদহ গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, ধান, ভুট্টা ও গমের আবাদের সাথে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ।

খানসামা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ১২০ জন কৃষক ১২০ বিঘা জমিতে এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ১২০ বিঘা জমিতে ১২০ জন কৃষককে বীজ ও প্রযুক্তিসহ কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এর আবাদ শুরু হয়েছে।

উপজেলার নেউলা গ্রামের কৃষক সাফিয়ার রহমান জানান, বেশ কিছুদিন থেকেই এ ফুল চাষে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পরে কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছি। সার, সেচ ও কীটনাশক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি সূর্যমুখী চাষে খরচ হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। তিনি বলেন, যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি আয় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যাবে।

ভান্ডারদহ গ্রামের নুরল ইসলাম জানান, সূর্যমুখী চাষে খরচ কম লাভ বেশি। যে কারণে আগামীতে অনেক কৃষকই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকবে। সূর্যমুখীর কা- জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যাবে, যা থেকে বাড়তি একটা লাভ মিলবে। তাছাড়া এটি চাষে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। শুধুমাত্র দুটি সেচ দিলে এবং ফুলগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করলেই হলো।

সূর্যমুখী ফুল চাষী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন জানান, উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। এর আগে কখনও বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হয়নি। অনেকেই সৌন্দর্যবর্ধনকারী ফুল হিসেবে বাড়ির আঙিনায় এটা লাগিয়ে থাকতেন। কৃষি বিভাগের প্রদর্শনী এই প্লটের মাধ্যমে স্থানীয়দের মাঝে এটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। অনেক কৃষকই এটার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামীতে স্থানীয়ভাবে এর ব্যাপকতা অনেক বাড়বে এবং কৃষকরাও সূর্যমুখী চাষে লাভবান হবেন।