দিনাজপুরে সমাবেশে বক্তারা: নিত্যপণ্যের বাজার আওয়ামী লীগের মুনাফাখোরদের নিয়ন্ত্রণে

নিউজ ডেস্ক: সরকারের পদত্যাগ, অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে শেষ দিনের মতো রোডমার্চ করছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বুধবার বেলা ১২টায় দিনাজপুর সদরের লোক ভবনে প্রথম সমাবেশ করে দলটি। এরপর বিকালে রংপুরে সমাবেশের মধ্য দিয়ে ৪ দিন ব্যাপী রোডমার্চ কর্মসূচি শেষ হবে।

দিনাজপুরের সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আওয়ামী লীগ আরেকটা জালিয়াতি, প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। এই ভিসা নীতি সাতমাস আগে ঘোষণার মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে পরিস্থিতি, বাজারে গেলে মনে হয় না দেশে কোন সরকার আছে। সকালে একদাম, বিকালে একদাম আবার রাতে আরেকদাম। নিত্যপণ্যের পুরো বাজার আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত মুনাফাখোর নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিদিন মানুষের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা কেটে নিচ্ছে। শুধুমাত্র দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য গত কয়েকমাসে ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে এসেছে।

সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই সরকার বড় বড় প্রকল্পগুলো লুটপাতের জন্য করেছে। এই টাকা পাচার করে বিভিন্ন জায়গায় বেগম পাড়া করেছে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরে বেগম পাড়া করেছে।

তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুতের বিল দিয়েছি কিন্তু সরকার সেই বিল পরিশোধ করে নাই।

কয়লা আনে নাই। যার জন্য এখন বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে গেছে। এই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট যা মানুষের সহ্যের বাহিরে চলে গেছে। হায়নার শক্তি অবৈধভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে লুটপাট দুর্নীতি করেছে। এতো অবিচার, অনিয়ম পৃথিবীর কোন দেশে হয় না যেটা বাংলাদেশে হচ্ছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম এই নেতা আরও বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় আমেরিকা ভিসা নীতি দিয়েছে। কত কলঙ্কজনক অধ্যায়। যে দেশকে আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি সেই দেশটিকে ওই সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, বেলারুশের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রের জায়গায় নিয়ে আমাদের দাঁড় করিয়েছে এই হাসিনা সরকার। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ এই দিনাজপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলছি, কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে এই অবৈধ সরকারকে উৎখাত করে চিরতরে বিদায় দেব। আমাদের কাজ সংবিধান সংস্কার করা, রাষ্ট্র সংস্কার করা, শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করা। তাই আমরা ১৪ দফা নিয়ে দিনাজপুরে হাজির হয়েছি। এই ১৪ দফা বাস্তবায়ন হলে এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।

দিনাজপুর সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, জেএসডি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন পাটোয়ারীসহ গণতন্ত্র মঞ্চের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।