ড্রামে ভোজ্যতেল বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ

নিউজ ডেস্ক:বাল্ক আকারে (ড্রাম) চলমান ভোজ্যতেল বিক্রি বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। দীর্ঘদিন এসব ড্রাম ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে বলে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও এসব তেলের গুণগত মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
শিল্প মন্ত্রণালয় ও মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসটিআই এজন্য ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে এখনো কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দ্রুদতই তা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
আর সে বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান এবং সার্টিফিকেশন অব এডিবল অয়েল ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ড. আল আমীন সরকার বলেন, ড্রামে তেল বিক্রি বন্ধ করতে চাই সেটা ঠিক। এজন্য প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। আর বিভিন্ন পর্যায়ের তেল ব্যবসায়ী ও পরিশোধনকারীদের সাথে আবারো বসবো কিছু দিনের মধ্যে। কারণ ড্রাম বাদ দিয়ে নতুন কি ব্যবস্থা চালু করা যায় সেটার বিষয়েও তাদের মতামতের প্রয়োজন। গত বছর থেকেই ড্রামে তেল বিক্রি কথা শুরু হয়। এ নিয়ে ট্যারিফ কমিশনেও প্রথম ব্যবসায়ীদের সাথে সরকার পক্ষের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে তেল পরিশোধনকারী ও মোড়কজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও এ বিষয়ে একমত হয়েছিল। তবে তারা বাল্ক তেল বিক্রি করার দায় দায়িত্ব পুরোপুরি পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপর চাপান। যদিও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এর দায় ওই সরবরাহকারীদেরই দিয়ে আসছে।
দেশে এখনো দুই-তৃতীয়াংশের বেশি তেল বাল্ক আকারে বিক্রি হয়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসব তেল সারা দেশে সরবরাহ করেন যা গ্রামে-গঞ্জে খুচরায় ওই ড্রামে অথবা আলাদা পাত্রে ভরে বিক্রি করা হয়।
বিএসটিআইর পরিচালক (মান) এস এম ইসহাক বলেন, দীর্ঘদিন ড্রামে তেল রাখার কারণে সেটা পরীক্ষার পরে একাধিকরার স্বাস্থঝুঁকি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া খোলা তেলে সরবরাহ ও বিক্রির সময় নানা ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান মিশে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে আমরা বাল্ক তেল বিক্রি বন্ধ হোক সেটা চাই।
এদিকে ড্রামের তেলে স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি অনেক ধরনের অনিয়মও হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পাম অথবা সুপার পাম তেল বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন বলে। আর এসব তেলের মেয়াদ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়াও এসব তেলে সঠিক মাত্রার ভিটামিন মেশানো হয় না যা আইনত বাধ্যতামূলক।
বিএসটিআইয়ের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের বোতলজাত ও ড্রামের তেলের ৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭টি নমুনাতে ভিটামিনের উপস্থিতি সঠিক মাত্রায় পাওয়া যায়নি, যার মধ্যে ১৫টি নমুনাই ছিল ড্রামের তেল। আর গত বছরেও ২৩টি বোতলজাত ও ড্রামের তেলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যেখানে ৭টি নমুনাতে ভিটামিন পাওয়া যায়নি, যার সবগুলো ড্রামের।