কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন

সরকার ১৪ জানুয়ারির মধ্যে অষ্টম জাতীয় বেতনকাঠামোর প্রজ্ঞাপন সংশোধনের উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা গণছুটিসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।
ঢাকায় মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের সামনে গতকাল বৃহস্পতিবার অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সকাল ১০–১১টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে ব্যাংকের সহকারী পরিচালক থেকে নির্বাহী পরিচালক পর্যন্ত সব শ্রেণির কর্মকর্তারা যোগ দেন।
সরকারি চাকুরেদের জন্য ঘোষিত অষ্টম জাতীয় বেতনকাঠামোতে নিজেদের মর্যাদাহানি হয়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর প্রতিবাদে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা গত ২২ ডিসেম্বর থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে গতকাল থেকে ছয় দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল। সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন শুক্র ও শনিবার বাদ দিয়ে ১০ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিনই তাদের নানা কর্মসূচি থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিসে আহত: অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, অষ্টম জাতীয় বেতনকাঠামোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অন্যান্য সরকারি ব্যাংক অর্থাৎ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ও ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের সঙ্গে সমানভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এই সংজ্ঞায়ন ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মর্যাদা বা বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২-এর দর্শনের (স্পিরিট) সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলে মনে করেন আন্দোলনকারীরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা রয়েছেন চার হাজারের বেশি। অথচ কর্মকর্তাদের পদবিন্যাসে গ্রেড-১ কর্মকর্তার কোনো পদ নেই। এটি একটি দৃশ্যমান বৈষম্য।
আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম শ্রেণির পদ শুরু হয় সহকারী পরিচালক থেকে। ক্যাডার সার্ভিস ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান গ্রেডে সহকারী পরিচালকেরা এত দিন বেতন-ভাতা পেয়ে আসছিলেন। নতুন কাঠামোতে ক্যাডার সার্ভিস ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি শুরুর পদ অষ্টম গ্রেড রাখা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকে সরাসরি নিযুক্ত সহকারী পরিচালকদের রাখা হয়েছে নবম গ্রেডে। বিষয়টি খুবই অবমাননাকর।
মূল দাবি তিনটি: বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দাবি, নতুন বেতনকাঠামোর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে তাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে পৃথকভাবে উল্লেখ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিয়মিত সর্বোচ্চ পদ ‘নির্বাহী পরিচালক’ পদকে প্রথম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে এবং অন্যান্য স্তরের কর্মকর্তাদের পদ ঠিক করতে হবে ক্যাডার সার্ভিসের পদবিন্যাস অনুযায়ী।
নতুন বেতনকাঠামোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগদানকারী সহকারী পরিচালকদের যে নবম গ্রেডে বেতন দেওয়া হয়েছে, তা সংশোধন করে অষ্টম গ্রেডে নির্ধারণ করতে হবে।