উচ্চমূল্য যাচ্ছে রসুনে, পেঁয়াজের দাম অস্থিতিশীল

নাটোরে এবারও রসুনের বাম্পার ফলন

ঢাকা: ভরা মৌসুমেও রসুনের উচ্চমূল্য ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই মসলা পণ্যটির দাম বেড়েছে ৯৫ শতাংশ।
বিক্রেতারা বলছেন, নতুন রসুন বাজারে এলেও এগুলোর চাহিদা না থাকায় পুরনোতেই ব্যবসা করতে হচ্ছে তাদের।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে নতুন রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় পাওয়া গেলেও পুরনো দেশি রসুনের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া আমদানি করা রসুনের দাম বাড়তে বাড়তে কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা উঠেছে।

onionসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, রসুনের দাম এক মাসের ব্যবধানে গড়ে ২৬ শতাংশ, আর বছরের ব্যবধানে ৯৫ শতাংশ বেড়েছে।
মাসের ব্যবধানে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ আর বছরের ব্যবধানে ৭১ শতাংশ; আমদানি করা রসুনের বেলায় মাসিক বৃদ্ধি ২৭ শতাংশ হলেও বাৎসরিক বৃদ্ধি ১২৪ শতাংশ।

রসুনের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. মনসুর বলেন, “বাজারে যে নতুন রসুন দেখা যাচ্ছে সেটি এক কোয়া রসুন এবং কাঁচা। এই রসুনের বিশেষ চাহিদা নেই। যে কারণে পুরনো রসুনের দাম কমছে না। তবে নতুন রসুনের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।”
অন্যদিকে ভরা মৌসুমেও বাজারে পেঁয়াজের দামে ওঠা-নামা চলছে। এক সপ্তাহে দাম কমছে তো পরের সপ্তাহে দাম বাড়ছে।

গত সপ্তাহে কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত কমে ২২ থেকে ২৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। এ সপ্তাহে আবারও আগের দামে ফিরে গেছে আংশিক আমদানি নির্ভর পণ্যটি।
বাজারে দেশি পেঁয়াজ ২৪ থেকে ৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে; আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. মনসুর বলেন, “এতদিন বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ছিল, এগুলোর দাম কম ছিল। এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজ শেষ, নতুন পেঁয়াজ আসছে। এজন্য দাম একটু বাড়তি, আবার কমবে।”

শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ৎ বণিক সমিতির অর্থ সম্পাদক মহসিন উদ্দিন ভুলু মিয়া বলেন, “বর্তমানে পেঁয়াজের দাম অনেক কম। এই যে বাড়া- কমার কথা বলছেন সেটা হচ্ছে পেঁয়াজের কোয়ালিটির কারণে। এতদিন বাজারে মুড়ি পেঁয়াজ ছিল, এখন নতুন পেঁয়াজ আসছে।”

নতুন পেয়াজের সরবরাহ বাড়লে আবারও দাম কমে আসবে বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।
তবে নিত্যপণ্যের বাজারে শাক-সবজি ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তিতে রেখেছে। বাজারে শীত মৌসুমের সবজির সরবরাহ কমলেও দাম সে তুলনায় বাড়েনি।

আলু, টমেটো, বেগুন, সিম, ফুল ও বাঁধাকপি মৌসুমের সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
আলু পাওয়া যাচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে, টমোটো ৮ থেকে ১২ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ২৫ টাকা, সিম ১৫ থেকে ২৫ টাকা, ফুল ও বাঁধাকপি ১০ থেকে ২০ টাকা পিস দরে পাওয়া যাচ্ছে।
বাজারে নতুন এসেছে ঢেঁড়স, উচ্ছে, করলা, চিচিংগা। পটোলও আসা শুরু করেছে।
ঢেঁড়স মিলছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে, উচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিংগা ৪০ টাকা দরে।পটোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

তবে ডিম, চিনি ও লবণের বাড়তি দাম অব্যাহত রয়েছে। চিনির দাম ৫০ টাকায় ঠেকেছে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে এই পণ্যের দাম সাড়ে ৫ শতাংশ, আর বছরের ব্যবধানে প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়েছে।
লবণের দাম বাড়তে বাড়তে কেজি ৩৪ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এক মাসের ব্যবধানে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে এই পণ্যটির দাম। ডিমের দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে হালি ৩৬ টাকা।#