যত রকমের যুদ্ধাস্ত্রের প্রয়োজন বাংলাদেশ তা সংগ্রহ করবে : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: নতুন দুটি সাবমেরিন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যত রকমের যুদ্ধাস্ত্রের প্রয়োজন বাংলাদেশ তা সংগ্রহ করবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্য- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। কিন্তু যদি কেউ আক্রমণ করে তাহলে সেই আক্রমণের সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুতি সবসময় থাকবে।’ বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মতো দুটি সাবমেরিন সংযুক্তি অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি সাবমেরিন ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’র কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে চট্টগ্রাম নৌজেটিতে এই অনুষ্ঠান হয়। নৌবাহিনীর কমান্ডার এ এম মামুনুর রশিদের হাতে ‘নবযাত্রা’ সাবমেরিনের অধিনায়ক পদের এবং লেফট্যানেন্ট কমান্ডার মাজহারুল ইসলামের হাতে ‘জয়যাত্রা’র অধিনায়ক পদের কমিশনিং ফরমান তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই সাবমেরিনের কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন এই সাবমেরিনের মধ্য দিয়ে পূরণ হয়েছে। এ জন্য আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।‘

তিনি আরও যোগ করেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে নৌবাহিনীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক জাহাজ সংযুক্তি বর্তমান সরকারের আমলে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নৌবাহিনীতে সাবমেরিন দুটির সংযুক্তি একটি বিরল সৌভাগ্য ও সম্মানের ব্যাপার। স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও সাবমেরিন ছিল না। সাম্প্রতিক অত্যাধুনিক সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়ে আমাদের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশ নৌবাহিনী এখন ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। পৃথিবীতে গুটিকয়েক দেশ এখন সাবমেরিন ব্যবহার ও পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ বর্তমানে সেই কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপার।’

সাবমেরিনের নবীন ক্রুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন এই সাবমেরিন পরিচালনায় যথোপযুক্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন এবং প্রকৃত অপারেশনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।

‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামে বাংলাদেশের প্রথম দুই সাবমেরিন গত ২২ ডিসেম্বর চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। এর আগে গত ১৪ নভেম্বর এই সাবমেরিনগুলো বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে জানানো হয়েছিল, চীন থেকে কেনা ০৩৫ জি ক্লাসের এ দুটি সাবমেরিনে থাকছে নানা সুবিধা। শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করার সক্ষমতা রয়েছে টর্পেডো ও মাইন দিয়ে সু-সজ্জিত এই সাবমেরিনগুলোর। এগুলো ডিজেল ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন। যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার এবং প্রস্থে ৭.৬ মিটার। নৌবাহিনীতে এগুলো যুক্ত হওয়ার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত সাগর এলাকা নিরবচ্ছিন্নভাবে পাহারা দেওয়া ও আঘাত করার সক্ষমতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।