ভক্সওয়াগনের প্রতারণা গভীর ও বিস্তৃত : নিউইয়র্ক অ্যাটর্নি জেনারেল

ডেস্ক: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্মান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগনের প্রতারণা শুধু কয়েকজন সফটওয়্যার প্রকৌশলীতে সীমাবদ্ধ নয়, এটা অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো। গাড়ির কোম্পানিটির প্রতারণার বিস্তৃতি নিয়ে সম্প্রতি দায়েরকৃত মামলায় এ কথা জানিয়েছেন নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

এক দশকের বেশি সময় ধরে ভক্সওয়াগনের দূষণ প্রতারণা চলছে। ডিজেলচালিত যানবাহন সম্পর্কে নিয়ন্ত্রক ও ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করার পেছনে প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীর উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রয়াস থেকে বিষয়টি উঠে এসেছে। মঙ্গলবার নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক শ্নাইডারম্যান ভক্সওয়াগনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার নথিতে এ কথা বলা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, যত দূর জানা যায় ১৯৯৯ সালের দিকে নির্গমন পরীক্ষায় জালিয়াতির জন্য সফটওয়্যার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে সময় কোম্পানির বিলাসবহুল গাড়ি অডির প্রকৌশলী ইউনিট ডিজেলচালিত যানবাহন থেকে সরে আসার জন্য প্রযুক্তি উন্নয়ন করে। এ প্রযুক্তির ব্যবহারে গাড়িগুলোর ইউরোপিয়ান অ্যামিশন স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে বেশি কার্বন নির্গত করত। ফলে প্রকৌশলীরা গাড়িতে ‘অ্যাকুস্টিক ফাংশন’ নামে সফটওয়্যার যোগ করেন, যা পরীক্ষার সময় নির্গমন বন্ধ রাখে। ২০০৪ সালে প্রযুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়।

অবশেষে ‘ডিফিট ডিভাইস’ নামে পরিচিত সফটওয়ারটি উন্নত করে জার্মান গাড়ি কোম্পানিটি, যা ২০০৮ সালের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রিকৃত গাড়িতে ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ নিয়ন্ত্রকদের কাছে সফটওয়ারটি ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে ভক্সওয়াগন। এ সফটওয়্যার ব্যবহারে রাস্তায় গাড়িগুলো নির্ধারিত পরিমাণের ৪০ গুণ পর্যন্ত দূষণ ঘটাতে সক্ষম। পরবর্তীতে পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা এ জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করলে সারা বিশ্বে এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। এর জের ধরে ভক্সওয়াগনের প্রধান নির্বাহী মার্টিন উইন্টারকরন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

গাড়িতে যন্ত্রাংশটি ব্যবহারের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীর যুক্ততার বিষয়টি তুলে ধরতে দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালিয়েছে। সর্বশেষ মামলাটিতে তার বেশকিছু ই-মেইল ও দলিলের উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতারণার সঙ্গে শুধু কিছু সফটওয়্যার প্রকৌশলী জড়িত নন। গত অক্টোবরে ভক্সওয়াগনের যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নির্বাহী মাইকেল হর্নকে এজন্য অভিযুক্ত করা হয়। এবারের মামলায় কয়েকজন ব্যবস্থাপক, প্রকৌশলী ও নির্বাহীদের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এর আগে যাদের চিহ্নিত করা হয়নি। এছাড়া মামলায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতারণার তথ্য প্রকাশ করে দেয়ার পর বরখাস্ত বা পদত্যাগকারীদের নামও রয়েছে।