দেশের বাইরে থেকে সুন্দরবনকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে -এমাজউদ্দিন

 

ঢাকা: সুন্দরবনকে হত্যা করে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা দেশের বাইরে থেকে করা হচ্ছে মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে যখন সন্ত্রাসবাদী হামলা চলছে, তখন সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে জাতিকে আড়াল করে রামপালের কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের চুক্তি করা হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘সুন্দরবন একটাই: সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, রামপালের কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের এমডির দায়িত্ব কোনো বাংলাদেশীকে দেওয়া হয়নি, বরং এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ভারতের একজনকে। আন্তর্জাতিকভাবে সুন্দরবনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেভ দ্যা স্ন্দুরবন ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ সভায় এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্রের পরিকল্পনা আমাদের দেশের কারও করা। বাংলাদেশের কেউ জেনেশুনে এই ক্ষতি করবে তা বিশ্বাস করা যায় না।

তিনি জানান, সুন্দরবনের ক্ষতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরোপুরি জানেন না। তিনি সুন্দরবনের ক্ষতির বিষয়টি পুরোপুরি জানলে এতবড় ক্ষতি হতে দিতেন না। সুন্দরবন বাংলাদেশের জন্য অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অনেক ঝড়ঝঞ্জা থেকে বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচিয়েছে। কত অল্প আয়ের জন্য জাতির কত বড় ক্ষতি করতে যাচ্ছে সরকার তা এখনো বুঝতে পারছে না। আগামী আগস্টের মধ্যে সুন্দরেবনের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করে জাতির সামনে তুলে ধরতে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বিদ্যুতকেন্দ্র সরিয়ে অন্য জায়গায় স্থাপনেরও আহ্বান জানান তিনি।

সুন্দরবন ধ্বংসকারী প্রকল্পের চুক্তি বাতিলের দাবি:

রামপালসহ সুন্দরবন ধ্বংসকারী সব প্রকল্পের নির্মাণ চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। মানববন্ধনে নেতারা বলেন, সরকার সকল জনমত, বিশেষজ্ঞদের মতামত, পরিবেশবিদদের মতামত উপেক্ষা করে একরোখা নীতিতে সুন্দরবন বিধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ চুক্তি করে।

একদিকে পরিবেশ রক্ষায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ অন্যদিকে পরিবেশ বিধ্বংসী রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকে দ্বি-চারিতা বলে আখ্যায়িত করে নেতারা বলেন, এই চুক্তি সুন্দরবনের অস্তিত্ব ও বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ভারতীয় কোম্পানির স্বার্থে। দেশ ও জনগণের প্রতি যদি কোনো দায় থাকত তা হলে সরকার এমন চুক্তি করত না।

নেতারা আরো বলেন, আমরা বারবার দাবি করছি বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষায় সুন্দরবনের ভূমিকা অপরিসীম। ভারতের সঙ্গে যে নির্মাণ চুক্তি করছে তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। এই চুক্তি জনগণ কোনোভাবেই মেনে নিবে না।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, রাশিব রহমান, শ্যামল বর্মণ, সাদেক হোসেন, হযরত আলী রাজীব, রুখসানা আফরোজ আশা, মুক্তা বাড়ৈ প্রমুখ।