মাটির গহীনে বিলুপ্ত প্রায় পাহাড়ি আলু

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): পাহাড়ি মাটির অন্তঃপুরে পাহাড়ি আলুর জন্ম, সেখানেই একটু একটু করে বেড়ে উঠে। মাটিনির্ভর অন্য সবজিগুলো দৃশ্যমান হলেও সে থাকে মাটির বুকের গহীনে, বহু নিচে। সাধারণ আলুর চেয়ে এরা আকৃতিতে বেশ স্থূলকায়। শরীরে রয়েছে অনেক অসম অংশ। এই পাহাড়ি আলু আজ আর সহজলভ্য নয়, বর্তমানে এটি বিলুপ্ত প্রায়।

পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা হঠাৎ হঠাৎ এর সন্ধান পান। আর যারা এটি চেনেন বা এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন তারা এই মৃত্তিকা সবজির জন্য প্রচ- আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মাটি থেকে তোলা মাত্রই পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা এর স্বাদ নিতে কিনে নিয়ে যান। পাহাড়ি আলুটি মাটির বহু নিচে থাকলেও তার একটি সংযুক্ত লতা উপরে উঠে আসে। যারা চেনেন তারা এই লতা দেখেই বুঝতে পারেন ভেতরে পাহাড়ি আলুর খনি আছে। তারপর মাটি খুঁড়ে এটি সংগ্রহ করা হয়। সোমবার (০৬ মার্চ) দুপুরে লাখাইছড়া চা বাগানের পাহাড় থেকে চা শ্রমিকরা মাটি খনন করে নিচ থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় কেজি পাহাড়ি আলু সংগ্রহ করেছেন। সংগ্রহের কিছুক্ষণের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। ওইদিন দুপুরে লাখাইছড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী বচো কন্দের উঠোনে রয়েছে নিজের জন্য সংগ্রহ করা দু’টি পাহাড়ি আলুর অংশ। অনেকেই যার যার প্রয়োজন মতো নিয়ে গেছেন।

ওই এলাকার অধিবাসী মধু তাঁতি বলেন, এই পাহাড়ি আলু এখন দেখা যায় না। আগে প্রায়ই পাওয়া যেতো। এক কোমড় মাটির নিচে থাকে এটি। এই আলু খেতে খুবই সুস্বাদু। আর বেশ উপকারী। আমরা একে ‘সুতনি আলু’, ‘খামালু’ প্রভৃতি বলি।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ১৩ বছর। সে সময় দেশে পর্যাপ্ত খাবার ছিলো না। আমাদের অনেকে তখন এই পাহাড়ি আলু খেয়ে জীবন বাঁচিয়েছে। এর উপকারিতা জানতে চাইলে মধু তাঁতি বলেন, পাহাড়ি আলু সাধারণ আলুর মতো নয়। এটি শক্তিবৃদ্ধি করে ও ক্ষুধামন্দা দূর করে।