কল্যানপুরে যেভাবে সফল হলো ‘অপারেশন স্টর্ম টুয়েন্টি সিক্স’

ঢাকা: কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের গার্লস হাই স্কুলের পাশে তাজ মঞ্জিল নামের ছয় তলা ওই ভবনকে স্থানীয়রা চেনেন ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে, যেখানে বেশিরভাগ ফ্ল্যাট মেস হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ভবনের পঞ্চম তলায় জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছিল বলে পুলিশের তথ্য।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, সোমবার মধ্যরাতের পর পুলিশ ও র‌্যাবের প্রাথমিক অভিযান শুরু হয়। পরে সোয়াট বাহিনীর নেতৃত্বে ‘অপারেশন স্টর্ম টোয়েন্টি সিক্স’ নামে মূল অভিযান চলে ভোর ৫টা ৫১ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ওই বাসায় তল্লাশি করেত গেলে পুলিশের দিকে গ্রেনেড ছোড়া হয়। সেখানে জঙ্গি আছে ধারণা করে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

“কিছু সময় পর পুলিশ পুরো বাসাটি কর্ডন করে ফেলে যেন জঙ্গিরা পালিয়ে যেতে না পারে। এরপর পুলিশের বিশেষায়িত টিম সোয়াট ও বোমা নিস্ত্রিয়করণ ইউনিট ঘটনাস্থলে যায় ও রেকি করে।

“ভোর ৫ টা ৫১ মিনিটে পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সময় জঙ্গিরা ফ্ল্যাটের দরজা খুলে গুলি করতে করতে পালানোর চেষ্টা করে। তাদের পরনে কালো রঙের জঙ্গি পোশাক ছিল, মাথায় ছিল পাগড়ি; সঙ্গে ছিল ব্যাগপ্যাক।”

ব্যাগগুলো তল্লাশি করলে ‘নিশ্চয়ই কিছু পাওয়া যাবে’ বলে আইজিপি শহীদুল হকের ধারণা।

তিনি বলেন, “গুলশানে জেএমবির যে গ্রুপটি হামলা চালিয়েছিল, এরা সে গ্রুপেরই কেউ। আমাদের ধারণা তারা জেএমবির সদস্য, তবে ওরা নিজেদের আইএস বলে দাবি করে। আইএসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।”

ওই ভবনের ছয় তলার বাসিন্দা আল্লামা ইকবাল অনিক জানান, ভবনের প্রতিটি তলায় চারটি করে ফ্ল্যাট। বেশিরভাগ ফ্ল্যাট ‘ব্যাচেলরদের’ ভাড়া দেওয়া, বাড়িওয়ালার পরিবার থাকে দোতলায়।

মিরপুর থানার এস আই মিজানুর রহমান জানান, গত ২০ জুন সাতজন থাকার কথা বলে ওই বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। বাড়ির মালিকের নাম আতাহার উদ্দিন আহমেদ, তবে দেখভাল করেন তার আত্মীয়রা। পঞ্চম তলার ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য তাদের হাতে নেই।

নিহতদের মধ্যে সাতজনের লাশ পাওয়া গেছে পঞ্চম তলার করিডোরে, দুজনের লাশ ছিল দুটি কক্ষে।