আইএস বাংলাদেশে নেই: আইজিপি

ঢাকা: গুলশান হামলা আইএস চালিয়েছিল বলে সিঙ্গাপুরের অধ্যাপকের দাবি নাকচ করেছেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলেছেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীরা এদেশীয় সন্ত্রাসী।

বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন আইজিপি।

একদিন আগে এই সম্মেলনেই সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রোহান গুনারত্নে বলেছিলো, গুলশানের ক্যাফেতে হামলা চালিয়েছিল আইএস, যা সংগঠনটির কথিত মুখপত্র দাবিকে এসেছিল।

তার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শহীদুল হক বলেন, “গুলশান হামলার পর আইএস দাবি করল হামলাকারীরা তাদের লোক। এরপর এত অপারেশনে এত লোক মারা গেল, কিন্তু আইএস তখন দাবি করেনি যে তারা আইএসের সদস্য। এসব প্রোপাগান্ডার কোনো ভিত্তি নেই।”

গুলশান হামলাকারীরা বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএমবিরই একটি ধারা বলে শুরু থেকে বাংলাদেশ সরকার দাবি করে আসছে, যা ঠিক হচ্ছে না বলে মন্তব্য করে সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গুনারত্নে।

পুলিশ প্রধান বলেন, “তিনি (গুনারত্নে) একটি কলেজের অধ্যাপক। তার একাডেমিক যে রিসার্চ আছে তাতে তিনি তার মতো বলেছেন। কিন্তু তার মতো বলার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। তিনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট জানেন না।

“তিনি যাকে আইএস বলেন, আমরা সেই গ্রুপের অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। কিন্তু কেউ স্বীকার করেনি যে তারা আইএসের সঙ্গে জড়িত। তারা তাদের গুরু বা নেতা সারোয়ার জাহান বা অন্য নাম বলেছে।”

তবে এই সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আইএসের ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে ‘নেটওয়ার্ক’ থাকতে পারে বলে স্বীকার করেন শহীদুল।

“অনেক কিছুতে থাকতে পারে-ফেইসবুকে থাকতে পারে, সোশাল মিডিয়ায় থাকতে পারে, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।”
বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে তিন দিনের এই সম্মেলন চলছে ঢাকা সোনারগাঁও হোটেলে।

আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনাম এতে অংশ নিচ্ছে।

এছাড়া ইন্টারপোল, ফেইসবুক, যুক্তরাষ্ট্রের আইজিসিআই, এফবিআই, আসিয়ানপোল ও আইসিআইটিএপিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারাও যোগ দিয়েছেন সম্মেলনে।

সম্মেলনের ফাঁকে ব্রুনাই ও ভিয়েতনামের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসেন বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান।

তিনি বলেন, “ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশিরা কঠোর পরিশ্রম করে বলে সেদেশের প্রতিনিধি আমাদের জানিয়েছেন। ভিয়েতনামের কর্মকর্তারা তাদের দেশে মাদক ও মানব পাচার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একটি এমওইউ করতে চায়।”

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শহীদুল বলেন, “ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ে চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা প্রশিক্ষণ, লজিস্টিক ও ইকুইপমেন্ট সাপোর্ট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়াও ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”