সেনাবাহিনীর কল্যানে জাহাইজ্জ্যার চর হয়ে গেলো স্বর্ণদ্বীপ

ডেস্ক: ডাকাত ও নৌদস্যুর আতঙ্কে কয়েক বছর আগেও যে চর ছিল বিরান ভূমি এখন সেখানে গড়ে উঠেছে গবাদি পশুর খামার, হয় রবি শস্যের চাষ। ৩৬০ বর্গ কিলোমিটারের নোয়াখালীর জাহাইজ্জ্যার এভাবেই বদলে দিয়েছে সেনাবাহিনী। স্বর্ণদ্বীপ নাম দিয়ে দ্বীপটিকে ঘিরে বৃহৎ সেনা প্রশিক্ষণ এলাকা নির্মাণের পাশাপাশি স্থানীয়দের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে বাহিনীটি।

১৯৭৮ সালে নোয়াখালীর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদীর মোহনায় জেগে ওঠে জাহাইজ্জ্যার চর। যার বর্তমান নাম স্বর্ণদ্বীপ। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে শুরু থেকেই চরটিকে ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো দস্যুর দল।

সমুদ্রের খুব কাছাকাছি হওয়ায় বছরের প্রায় আট মাসই জলমগ্ন থাকে দ্বীপটির অধিকাংশ এলাকা। তাই এখানে ফলস উৎপাদনে সবথেকে বড় বাধা এর মাটির লবনাক্ততা। তবে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এখানে রবি শস্যের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০টি বাথানের মাধ্যমে কয়েক হাজার গরু, মহিষ এবং ভেড়া পালন করা হচ্ছে।

স্বর্ণদ্বীপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ব্যবহৃত হয় পশু চারণভূমি হিসেবে। একসময় পশু প্রতি চাঁদা আদায় করতো ডাকাতেরা। ২০১৩ সালে সরকার দ্বীপটি সেনাবাহিনীকে বরাদ্দ দিলে পাল্টে যায় দৃশ্যপট।

স্থানীয়রা বলেন, ‘ডাকাতের ভয়ে আমরা ঘুমাতে পারতাম না এখন আমরা ভালো কাছি।’

মেজর মুরশিদুল আজাদ বলেন , উন্নয়নের একটা প্রধান শর্ত হচ্ছে নিরাপত্তা। আমরা এখানে আসার পর তা নিশ্চিত করেছি।

সেনাবাহিনী জানায়, দ্বীপটির দায়িত্ব পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, সেনা প্রশিক্ষণ এলাকা নির্মাণ ও স্থানীয়দের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে তারা।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন অর রশীদ বলেন,  স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সম্প্রিতি নামে সমবায় গড়ে তোলা হয়েছে।

স্বর্ণদ্বীপে উন্নত জাতের মহিষ, ভেড়া ও হাঁস পালনের পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে ডেইরি প্ল্যান্ট।

স্থানীয়রা বলেন,  ভেড়া মহিষ কবুতর এগুলো সবাই চাষাবাদ করছে।

মেজর মোহাম্মদ ছাইদুর রহমান বলেন, প্রায় ১০ হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মহিষের খামার হবে। প্রায় ২০ হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ভেড়ার খামার হবে।

সেনাবাহিনী আরো জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দ্বীপ রক্ষা এবং প্রাণীবৈচিত্র সংরক্ষণেও দ্বীপটিতে বিপুল কেওড়া বীজ বপন ছাড়াও রোপণ করা হয়েছে ভিয়েতনাম থেকে আনা ডুয়ার্ফ প্রজাতির দেড় হাজার নারিকেল চারা।-সময়