জুমুয়ার নামাজে রাষ্ট্রীয় খুতবার পরামর্শ ইফা’র

ঢাকা: জুমুয়ার নামাজের সময় দেশের মসজিদগুলোতে ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী ভিন্ন-ভিন্ন খুতবা না পড়ে যদি জাতীয়ভাবে একটি খুতবা রচনা করা হয় তাহলে বিষয়টি ইতিবাচক হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম আফজাল।

তিনি বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে খুতবা সাধারণত রাষ্ট্র কর্তৃক রচনা করে দেয়া হয় এবং সেটা সকল মসজিদে পড়া হয়। আমাদের দেশে – বিশেষ করে পাক-ভারত উপমহাদেশে – বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে এ সিস্টেমটা সেভাবে চালু হয় নাই।

বিবিসি বাংলার সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এমন ধারণা ব্যাক্ত করেন ইফা’র মহাপরিচালক শামীম আফজাল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় তিন লাখ মসজিদ আছে। সব মসজিদের খতিব এবং ইমামদের চিন্তা এবং দৃষ্টিভঙ্গি এক রকম নয়। ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে জিহাদের নামে সন্ত্রাসবাদী চেতনায় বিশ্বাস করে ভ্রান্ত ওয়াহাবী, ছালাফী, লা-মাযহাবী মতবাদের অনুসারিরা।

শামীম আফজান মনে করেন, খুতবা ইসলামের একটি মৌলিক দর্শন। কুরআন ও হাদিসের আলোকে এবং দেশের সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে জাতীয়ভাবে খুৎবা রচনা করা যেতে পারে।

দেশের বিজ্ঞ আলেমরা এই খুতবা রচনায় সহায়তা করতে পারেন বলে আফজাল উল্লেখ করেন।

সৌদি আরবে মসজিদে প্রতি সপ্তাহে কী ধরণের খুতবা পড়া হবে সেটি সরকারের তরফ থেকে একটি নির্দেশনা দেয়া হয়। বাংলাদেশেও বিষয়টি সেভাবে ভাবা হচ্ছে কিনা? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ইফা’র মহাপরিচালক জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো মতামত দেয়া যাচ্ছেনা। কারণ বিষয়টিতে এখনো সরকারের কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

তিনি বলেন, এখন থেকে একশ বছর আগে যত ওলামা ছিলেন তারা কুরআন এবং সুন্নাহকে আরবিতে পড়তেন, বুঝতেন এবং জ্ঞান অর্জন করতেন। বর্তমানে মাদ্রাসাগুলো থেকে দ্বীনী শিক্ষার কিছু ব্যত্যয় ঘটেছে। এ ব্যত্যয় পুনরুদ্ধার করতে গেলে আমাদের প্রকৃত আলেম তৈরি করতে হবে।

শামীম আফজাল মনে করেন, বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষাকে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ করতে হবে। এটি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়ভাবে খুতবা রচনায় দেশের বিজ্ঞ আলেমরা যদি সহায়তা করে তাহলে অনেকে ‘উপকৃত’ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি অভিযোগ করেন,অনেকে ইসলামের ‘ভিন্ন ব্যাখ্যা’ তুলে ধরছেন। সেজন্য খুতবা জাতীয়ভাবে রচনা করা হলে মুসলমান জনগোষ্ঠী এটিকে সাধুবাদ জানাবে বলে তিনি মনে করেন।

এ মাসের শুরুতে গুলশানে সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে রোববার আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রীসভা কমিটির এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মসজিদগুলোতে ইমামরা কোনো ধরনের ধর্মীয় অনুশাসন প্রচার করছেন তার ওপর নজর রাখা হবে এবং অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করা হবে।

সূত্র: বিবিসি