আমেরিকাতে কি মানুষ মারছে না – প্রশ্ন গণশিক্ষামন্ত্রীর

ঢাকা: প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানবাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের ভূমিকার সমালোচনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের দেশে একটি-দুটি মারা গেলে প্রতিদিন তাঁরা বিবৃতি দেন। তাঁরা নছিহত করেন—গণতন্ত্র নেই বলে, ভালো নির্বাচন হয়নি বলে এসব ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আমেরিকাতেও কি মানুষ মারছে না? স্কুলে, কলেজে মানুষ মারছে না? এক ক্লাবে একবারে ৫৩ জন মারা গেল।’

মন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ফ্রান্সে গণতন্ত্র নেই? ব্রিটেনে গণতন্ত্র নেই? ওখানে তো গণতন্ত্র আছে। গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলে তাদের কাছ থেকে আমাদের গণতন্ত্রের ধারণা নিতে হচ্ছে। সেখানেও তো এসব ঘটনা ঘটছে।’

আজ রোববার সকালে দশম জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে অস্থির সময় যাচ্ছে। যারা এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে, তারা আমাদের উন্নয়নের অগ্রগতি থামিয়ে দিতে চায়। কথায় আছে, সুখে থাকলে ভূতে কিলায়। বাংলাদেশেও নানা বাহিনীর নামে হত্যাকাণ্ড ঘটছে। তারা দেশকে অস্থির করতে চায়।’

বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রের ট্রেন এসেছিল, আপনারা ওঠেননি। এখন অপেক্ষা করুন। ২০১৯ সালে আবার ট্রেন আসবে। তখন দেখা যাবে দেশের জনগণ কার ট্রেনে ওঠে।’ তিনি বলেন, কেউ কেউ বলছেন নির্বাচন দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। যারা মানুষ মারছে, তারা তো নির্বাচন চাইছে না।

জাতীয় সংলাপ আহ্বানকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কেউ বলছেন সমস্যার সমাধানে জাতীয় সংলাপ করতে হবে। আমরা কার সঙ্গে বসব? মুফতি হান্নানদের সঙ্গে? আইএস মানে ইসলামী ছাত্রশিবির। এদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান সরকারের আছে। এদের কর্মকাণ্ড থামানোর জন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, এই দুই বছরে নতুন করে ২২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরও প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এই এক মাসের মধ্যেই নিয়োগ পাবে। নিজের ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের ২৪ বছরে একটা প্রাইমারি স্কুলও সরকারি হয়নি। আজ যে মাদ্রাসাশিক্ষা, ধর্মের কথা বলি, সেই মাদ্রাসাও ছিল অবহেলিত। আমি দেখিনি পাকিস্তানের ২৪ বছরে একটি মাদ্রাসাতে কোনো টাকা দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।’

গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করার পর শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে একসঙ্গে ৩৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি করেন। এরপর দীর্ঘদিন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ২৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি করলেন। আর কেউ কিছু করেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।